সোমবার, ০১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনামঃ
চান্দিনায় চুরির জেরে রাজনৈতিক দুই দলের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষে রণক্ষেত্র চিলোড়া বাজার ঢাকাস্থ চান্দিনা ছাত্র কল্যাণ সমিতির ২০২৫–২৬ অর্থবছরের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা উইন্ডোজের বিকল্প অপারেটিং সিস্টেম আনছে গুগল, পিসিতেই মিলবে অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ দক্ষিণ এশিয়ায় ভয়াবহ বন্যা ও ভূমিধস: নিহত প্রায় ৬০০, নিখোঁজ শতাধিক দেবিদ্বারে গাঁজাসহ স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা আটক কুমিল্লা ফুডপান্ডায় নিয়োগ, অভিজ্ঞতা ছাড়াও আবেদনের সুযোগ বুড়িচংয়ে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে বসতঘরসহ দুটি ঘর পুড়ে ছাই শ্রীলঙ্কায় জরুরি অবস্থা ঘোষণা অবস্থা ‘অপরিবর্তিত’ এখনও ‘শঙ্কামুক্ত নন’ বেগম খালেদা জিয়া মঞ্চে লাল গালিচার ব্যবহার কীভাবে এলো? জানুন এর ইতিহাস

বিএনপির কাছে ক্ষমা চাইতে হবে হাসনাত আব্দুলাহকে, না হয় অবাঞ্ছিত ঘোষণা

নিজস্ব প্রতিনিধি:

“বিএনপির রাজনীতি চলে আওয়ামী লীগের টাকায়”—এমন একটি বিস্ফোরক মন্তব্যের জেরে কুমিল্লার রাজনৈতিক অঙ্গন উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক (কুমিল্লা বিভাগ) অধ্যক্ষ সেলিম ভূইয়া জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহকে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে নিঃশর্ত ক্ষমা চাওয়ার আল্টিমেটাম দিয়েছেন। অন্যথায়, তাকে কুমিল্লায় অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হবে বলে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন তিনি।

সোমবার (১৯ মে) প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক জরুরি সাংবাদিক সম্মেলনে সেলিম ভূইয়া এই কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন।

ঘটনার সূত্রপাত গত ১৬ মে, যখন কুমিল্লা শিল্পকলা একাডেমিতে ছাত্র জনতার গণআন্দোলনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে হাসনাত আবদুল্লাহ বিতর্কিত মন্তব্যটি করেন। তিনি দাবি করেন, কুমিল্লার অনেক উপজেলায় যেমন আওয়ামী লীগের রাজনীতি তাদের নিজস্ব অর্থায়নে চলে, তেমনি বিএনপির রাজনীতিও আওয়ামী লীগের টাকায় পরিচালিত হয়। এমনকি কিছু উপজেলায় সব দলের রাজনীতি ‘বিক্রি’ হয়ে গেছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

হাসনাত আবদুল্লাহর এই মন্তব্যের পরপরই কুমিল্লা বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। এর জের ধরে সোমবার কুমিল্লা প্রেস ক্লাবে বিভাগীয় বিএনপি জরুরি সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে। দলের কুমিল্লা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সেলিম ভূইয়া লিখিত বক্তব্যে হাসনাত আবদুল্লাহর মন্তব্যের তীব্র নিন্দা জানান।

তিনি বলেন, “হাসনাত আব্দুল্লাহর এই ভিত্তিহীন ও দায়িত্বজ্ঞানহীন বক্তব্য কুমিল্লার বিএনপি নেতাকর্মীদের মর্মাহত করেছে। তার এই মন্তব্য রাজনৈতিক অপরিপক্কতা এবং সম্ভবত মানসিক দুর্বলতার পরিচায়ক। যিনি সম্প্রতি ‘রাজার পার্টি’ হিসেবে পরিচিত একটি দলের মুখপাত্রের দায়িত্ব পালন করছেন, তার কাছ থেকে এমন শিশুসুলভ মন্তব্য অপ্রত্যাশিত। রাজনীতিতে পারস্পরিক সম্মান ও সহনশীলতা অত্যাবশ্যক। হাসনাত আবদুল্লাহ যদি আগামী সাত দিনের মধ্যে তার এই মিথ্যা ও বানোয়াট বক্তব্য প্রত্যাহার করে বিএনপির শীর্ষ নেতৃবৃন্দের কাছে ক্ষমা না চান, তাহলে কুমিল্লায় তাকে কোনো রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতে দেওয়া হবে না।”

See also  দেবিদ্বারে বিএনপির ২০০ নেতাকর্মীর জামায়াতে যোগদান

সেলিম ভূইয়া আরও অভিযোগ করেন, “অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এ ধরনের অপরিণামদর্শী নেতাদের রাজনৈতিক মঞ্চে এনে পরিস্থিতি ঘোলাটে করার চেষ্টা করছে। সরকারের উচিত অবিলম্বে এদের মাঠ থেকে সরিয়ে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করা। নির্বাচন যত বিলম্বিত হবে, জনগণের মধ্যে সরকারের প্রতি অনাস্থা ততই বাড়বে।”

জুলাই-আগস্টের গণআন্দোলনে বিএনপির সক্রিয় ভূমিকার কথা উল্লেখ করে সেলিম ভূইয়া বলেন, “গত জুলাই-আগস্ট মাসে ফ্যাসিবাদী হাসিনা সরকারের পতনের আন্দোলনে বিএনপি অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে। আমাদের নেতা তারেক রহমানের সরাসরি তত্ত্বাবধানে দলের নেতাকর্মীরা মাঠে সক্রিয় ছিলেন। কুমিল্লাতেও বিএনপি নেতাকর্মীরা ঐতিহাসিক ভূমিকা রেখেছে।”

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা হাজী আমিন উর রশিদ ইয়াছিন, কুমিল্লা বিভাগীয় সহ সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাক মিয়া, দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহবায়ক জাকারিয়া তাহের সুমন, মহানগর বিএনপির সভাপতি উদবাতুল বারী আবু, দক্ষিণ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক আমিরুজ্জামান আমির, সদস্য সচিব আশিকুর রহমান মাহমুদ ওয়াসিম, বিএনপির নেত্রী সাবেরা আলাউদ্দিন হেনা এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

বিএনপির এই কঠোর অবস্থানের পর এখন দেখার বিষয়, এনসিপি নেতা হাসনাত আবদুল্লাহ আগামী এক সপ্তাহে কী পদক্ষেপ নেন। তার ক্ষমা চাওয়া না চাওয়ার ওপর নির্ভর করছে কুমিল্লার রাজনৈতিক পরিস্থিতি কোন দিকে মোড় নেয়।

চান্দিনায় চুরির জেরে রাজনৈতিক দুই দলের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষে রণক্ষেত্র চিলোড়া বাজার

বিএনপির কাছে ক্ষমা চাইতে হবে হাসনাত আব্দুলাহকে, না হয় অবাঞ্ছিত ঘোষণা

১৯ মে ২০২৫, ৫:১৮

নিজস্ব প্রতিনিধি:

“বিএনপির রাজনীতি চলে আওয়ামী লীগের টাকায়”—এমন একটি বিস্ফোরক মন্তব্যের জেরে কুমিল্লার রাজনৈতিক অঙ্গন উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক (কুমিল্লা বিভাগ) অধ্যক্ষ সেলিম ভূইয়া জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহকে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে নিঃশর্ত ক্ষমা চাওয়ার আল্টিমেটাম দিয়েছেন। অন্যথায়, তাকে কুমিল্লায় অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হবে বলে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন তিনি।

সোমবার (১৯ মে) প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক জরুরি সাংবাদিক সম্মেলনে সেলিম ভূইয়া এই কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন।

ঘটনার সূত্রপাত গত ১৬ মে, যখন কুমিল্লা শিল্পকলা একাডেমিতে ছাত্র জনতার গণআন্দোলনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে হাসনাত আবদুল্লাহ বিতর্কিত মন্তব্যটি করেন। তিনি দাবি করেন, কুমিল্লার অনেক উপজেলায় যেমন আওয়ামী লীগের রাজনীতি তাদের নিজস্ব অর্থায়নে চলে, তেমনি বিএনপির রাজনীতিও আওয়ামী লীগের টাকায় পরিচালিত হয়। এমনকি কিছু উপজেলায় সব দলের রাজনীতি ‘বিক্রি’ হয়ে গেছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

হাসনাত আবদুল্লাহর এই মন্তব্যের পরপরই কুমিল্লা বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। এর জের ধরে সোমবার কুমিল্লা প্রেস ক্লাবে বিভাগীয় বিএনপি জরুরি সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে। দলের কুমিল্লা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সেলিম ভূইয়া লিখিত বক্তব্যে হাসনাত আবদুল্লাহর মন্তব্যের তীব্র নিন্দা জানান।

তিনি বলেন, “হাসনাত আব্দুল্লাহর এই ভিত্তিহীন ও দায়িত্বজ্ঞানহীন বক্তব্য কুমিল্লার বিএনপি নেতাকর্মীদের মর্মাহত করেছে। তার এই মন্তব্য রাজনৈতিক অপরিপক্কতা এবং সম্ভবত মানসিক দুর্বলতার পরিচায়ক। যিনি সম্প্রতি ‘রাজার পার্টি’ হিসেবে পরিচিত একটি দলের মুখপাত্রের দায়িত্ব পালন করছেন, তার কাছ থেকে এমন শিশুসুলভ মন্তব্য অপ্রত্যাশিত। রাজনীতিতে পারস্পরিক সম্মান ও সহনশীলতা অত্যাবশ্যক। হাসনাত আবদুল্লাহ যদি আগামী সাত দিনের মধ্যে তার এই মিথ্যা ও বানোয়াট বক্তব্য প্রত্যাহার করে বিএনপির শীর্ষ নেতৃবৃন্দের কাছে ক্ষমা না চান, তাহলে কুমিল্লায় তাকে কোনো রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতে দেওয়া হবে না।”

See also  কুমিল্লা ফুডপান্ডায় নিয়োগ, অভিজ্ঞতা ছাড়াও আবেদনের সুযোগ

সেলিম ভূইয়া আরও অভিযোগ করেন, “অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এ ধরনের অপরিণামদর্শী নেতাদের রাজনৈতিক মঞ্চে এনে পরিস্থিতি ঘোলাটে করার চেষ্টা করছে। সরকারের উচিত অবিলম্বে এদের মাঠ থেকে সরিয়ে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করা। নির্বাচন যত বিলম্বিত হবে, জনগণের মধ্যে সরকারের প্রতি অনাস্থা ততই বাড়বে।”

জুলাই-আগস্টের গণআন্দোলনে বিএনপির সক্রিয় ভূমিকার কথা উল্লেখ করে সেলিম ভূইয়া বলেন, “গত জুলাই-আগস্ট মাসে ফ্যাসিবাদী হাসিনা সরকারের পতনের আন্দোলনে বিএনপি অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে। আমাদের নেতা তারেক রহমানের সরাসরি তত্ত্বাবধানে দলের নেতাকর্মীরা মাঠে সক্রিয় ছিলেন। কুমিল্লাতেও বিএনপি নেতাকর্মীরা ঐতিহাসিক ভূমিকা রেখেছে।”

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা হাজী আমিন উর রশিদ ইয়াছিন, কুমিল্লা বিভাগীয় সহ সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাক মিয়া, দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহবায়ক জাকারিয়া তাহের সুমন, মহানগর বিএনপির সভাপতি উদবাতুল বারী আবু, দক্ষিণ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক আমিরুজ্জামান আমির, সদস্য সচিব আশিকুর রহমান মাহমুদ ওয়াসিম, বিএনপির নেত্রী সাবেরা আলাউদ্দিন হেনা এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

বিএনপির এই কঠোর অবস্থানের পর এখন দেখার বিষয়, এনসিপি নেতা হাসনাত আবদুল্লাহ আগামী এক সপ্তাহে কী পদক্ষেপ নেন। তার ক্ষমা চাওয়া না চাওয়ার ওপর নির্ভর করছে কুমিল্লার রাজনৈতিক পরিস্থিতি কোন দিকে মোড় নেয়।