সোমবার, ০১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনামঃ
চান্দিনায় চুরির জেরে রাজনৈতিক দুই দলের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষে রণক্ষেত্র চিলোড়া বাজার ঢাকাস্থ চান্দিনা ছাত্র কল্যাণ সমিতির ২০২৫–২৬ অর্থবছরের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা উইন্ডোজের বিকল্প অপারেটিং সিস্টেম আনছে গুগল, পিসিতেই মিলবে অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ দক্ষিণ এশিয়ায় ভয়াবহ বন্যা ও ভূমিধস: নিহত প্রায় ৬০০, নিখোঁজ শতাধিক দেবিদ্বারে গাঁজাসহ স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা আটক কুমিল্লা ফুডপান্ডায় নিয়োগ, অভিজ্ঞতা ছাড়াও আবেদনের সুযোগ বুড়িচংয়ে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে বসতঘরসহ দুটি ঘর পুড়ে ছাই শ্রীলঙ্কায় জরুরি অবস্থা ঘোষণা অবস্থা ‘অপরিবর্তিত’ এখনও ‘শঙ্কামুক্ত নন’ বেগম খালেদা জিয়া মঞ্চে লাল গালিচার ব্যবহার কীভাবে এলো? জানুন এর ইতিহাস

কুমিল্লায় ধর্ষণে ব্যর্থ হয়ে মা-মেয়ে দু’জনকে হত্যা

  • Reporter Name
  • ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১:১১
  • 18

নিজস্ব প্রতিনিধি:

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সুমাইয়া আফরিন (২৩) ও তার মা তাহমিনা বেগম হত্যাকাণ্ডের মূল আসামি মো. মোবারক হোসেনকে (২৯) গ্রেপ্তার করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। ৮ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় ঢাকায় পালিয়ে যাওয়ার সময় কুমিল্লা নগরীর বাগিচাগাঁও এলাকা থেকে তাকে আটক করা হয়। পরদিন ৯ সেপ্টেম্বর দুপুরে কুমিল্লা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ নাজির আহমেদ খান সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

মোবারক হোসেন জেলার দেবিদ্বার উপজেলার কাবিলপুর গ্রামের মৃত আবদুল জলিলের ছেলে। তিনি পেশায় একজন ঝাড়ফুঁককারী বা কবিরাজ। নিহত সুমাইয়ার পরিবার দীর্ঘদিন ধরে মোবারকের মাধ্যমে ঝাড়ফুঁক করিয়ে আসছিল। সেই সূত্রে এক মাসেরও বেশি সময় ধরে তিনি তাদের বাসায় যাতায়াত করতেন।

গত রবিবার (৭ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ৮টায় মোবারক কালিয়াজুরি এলাকার নেলি কটেজে অবস্থিত সুমাইয়াদের ভাড়া বাসায় প্রবেশ করেন। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, তিনি বাসায় পানি ছিটিয়ে ঝাড়ফুঁক করে বেরিয়ে যান এবং পরে বেলা ১১টা ৩৪ মিনিটে আবারও বাসায় প্রবেশ করেন।

পুলিশের ভাষ্য অনুযায়ী, বাসায় প্রবেশের পর মোবারক সুমাইয়াকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন। এ সময় তার মা তাহমিনা বেগম বাধা দিলে মোবারক তাকে অন্য রুমে নিয়ে গিয়ে বালিশচাপা দিয়ে হত্যা করেন। এরপর সুমাইয়ার রুমে গিয়ে পুনরায় ধর্ষণের চেষ্টা করলে সুমাইয়া প্রতিরোধ করেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে মোবারক তাকে গলা টিপে হত্যা করেন। হত্যার পর তিনি বাসা থেকে চারটি মোবাইল ফোন ও একটি ল্যাপটপ নিয়ে পালিয়ে যান।

হত্যাকাণ্ডের পর পুলিশের একাধিক ইউনিট তদন্তে নামে। ভবনের নিচতলায় থাকা একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সিসিটিভি ফুটেজে মোবারকের উপস্থিতি নিশ্চিত হয়। সোমবার রাতে ঢাকায় পালানোর সময় তাকে গ্রেপ্তার করে ডিবি। তার কাছ থেকে লুট করা মোবাইল ও ল্যাপটপ উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়া বাসা থেকে মোবারকের আনা কমলা রঙের ব্যাগটিও উদ্ধার করা হয়।

See also  ঢাকাস্থ চান্দিনা ছাত্র কল্যাণ সমিতির ২০২৫–২৬ অর্থবছরের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা

ময়নাতদন্তের অপেক্ষা, ধর্ষণ হয়েছে কিনা—এ বিষয়ে পুলিশ সুপার জানান, বিষয়টি নিশ্চিত হতে ময়নাতদন্ত ও ফরেনসিক রিপোর্টের অপেক্ষা করতে হবে।

সুমাইয়া আফরিন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের ১৬তম ব্যাচের শিক্ষার্থী। তার মা তাহমিনা বেগম ছিলেন কুমিল্লা আদালতের সাবেক হিসাবরক্ষক নুরুল ইসলামের স্ত্রী। তারা চার বছর ধরে কালিয়াজুরি এলাকার নেলি কটেজে বসবাস করছিলেন।

র‌্যাব সন্দেহভাজন হিসেবে জেলার নাঙ্গলকোট থেকে আবদুর রব (৭৩) নামের এক কবিরাজকে আটক করেছিল। তবে পুলিশ জানিয়েছে, প্রাথমিক তদন্তে তার বিরুদ্ধে কোনো সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়নি। তাকে ছেড়ে দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। মোবারককে আদালতে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে। সেখানে তার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ড করা হবে। পুলিশ জানিয়েছে, তদন্ত চলমান রয়েছে এবং যদি আরও কেউ জড়িত থাকে, তাকেও আইনের আওতায় আনা হবে।

এই নির্মম হত্যাকাণ্ডে কুমিল্লা জুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। শিক্ষার্থী সুমাইয়া ও তার মায়ের জন্য ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে প্রশাসন সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে।

চান্দিনায় চুরির জেরে রাজনৈতিক দুই দলের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষে রণক্ষেত্র চিলোড়া বাজার

কুমিল্লায় ধর্ষণে ব্যর্থ হয়ে মা-মেয়ে দু’জনকে হত্যা

১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১:১১

নিজস্ব প্রতিনিধি:

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সুমাইয়া আফরিন (২৩) ও তার মা তাহমিনা বেগম হত্যাকাণ্ডের মূল আসামি মো. মোবারক হোসেনকে (২৯) গ্রেপ্তার করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। ৮ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় ঢাকায় পালিয়ে যাওয়ার সময় কুমিল্লা নগরীর বাগিচাগাঁও এলাকা থেকে তাকে আটক করা হয়। পরদিন ৯ সেপ্টেম্বর দুপুরে কুমিল্লা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ নাজির আহমেদ খান সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

মোবারক হোসেন জেলার দেবিদ্বার উপজেলার কাবিলপুর গ্রামের মৃত আবদুল জলিলের ছেলে। তিনি পেশায় একজন ঝাড়ফুঁককারী বা কবিরাজ। নিহত সুমাইয়ার পরিবার দীর্ঘদিন ধরে মোবারকের মাধ্যমে ঝাড়ফুঁক করিয়ে আসছিল। সেই সূত্রে এক মাসেরও বেশি সময় ধরে তিনি তাদের বাসায় যাতায়াত করতেন।

গত রবিবার (৭ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ৮টায় মোবারক কালিয়াজুরি এলাকার নেলি কটেজে অবস্থিত সুমাইয়াদের ভাড়া বাসায় প্রবেশ করেন। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, তিনি বাসায় পানি ছিটিয়ে ঝাড়ফুঁক করে বেরিয়ে যান এবং পরে বেলা ১১টা ৩৪ মিনিটে আবারও বাসায় প্রবেশ করেন।

পুলিশের ভাষ্য অনুযায়ী, বাসায় প্রবেশের পর মোবারক সুমাইয়াকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন। এ সময় তার মা তাহমিনা বেগম বাধা দিলে মোবারক তাকে অন্য রুমে নিয়ে গিয়ে বালিশচাপা দিয়ে হত্যা করেন। এরপর সুমাইয়ার রুমে গিয়ে পুনরায় ধর্ষণের চেষ্টা করলে সুমাইয়া প্রতিরোধ করেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে মোবারক তাকে গলা টিপে হত্যা করেন। হত্যার পর তিনি বাসা থেকে চারটি মোবাইল ফোন ও একটি ল্যাপটপ নিয়ে পালিয়ে যান।

হত্যাকাণ্ডের পর পুলিশের একাধিক ইউনিট তদন্তে নামে। ভবনের নিচতলায় থাকা একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সিসিটিভি ফুটেজে মোবারকের উপস্থিতি নিশ্চিত হয়। সোমবার রাতে ঢাকায় পালানোর সময় তাকে গ্রেপ্তার করে ডিবি। তার কাছ থেকে লুট করা মোবাইল ও ল্যাপটপ উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়া বাসা থেকে মোবারকের আনা কমলা রঙের ব্যাগটিও উদ্ধার করা হয়।

See also  কুমিল্লা ফুডপান্ডায় নিয়োগ, অভিজ্ঞতা ছাড়াও আবেদনের সুযোগ

ময়নাতদন্তের অপেক্ষা, ধর্ষণ হয়েছে কিনা—এ বিষয়ে পুলিশ সুপার জানান, বিষয়টি নিশ্চিত হতে ময়নাতদন্ত ও ফরেনসিক রিপোর্টের অপেক্ষা করতে হবে।

সুমাইয়া আফরিন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের ১৬তম ব্যাচের শিক্ষার্থী। তার মা তাহমিনা বেগম ছিলেন কুমিল্লা আদালতের সাবেক হিসাবরক্ষক নুরুল ইসলামের স্ত্রী। তারা চার বছর ধরে কালিয়াজুরি এলাকার নেলি কটেজে বসবাস করছিলেন।

র‌্যাব সন্দেহভাজন হিসেবে জেলার নাঙ্গলকোট থেকে আবদুর রব (৭৩) নামের এক কবিরাজকে আটক করেছিল। তবে পুলিশ জানিয়েছে, প্রাথমিক তদন্তে তার বিরুদ্ধে কোনো সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়নি। তাকে ছেড়ে দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। মোবারককে আদালতে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে। সেখানে তার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ড করা হবে। পুলিশ জানিয়েছে, তদন্ত চলমান রয়েছে এবং যদি আরও কেউ জড়িত থাকে, তাকেও আইনের আওতায় আনা হবে।

এই নির্মম হত্যাকাণ্ডে কুমিল্লা জুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। শিক্ষার্থী সুমাইয়া ও তার মায়ের জন্য ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে প্রশাসন সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে।