সোমবার, ০১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনামঃ
চান্দিনায় চুরির জেরে রাজনৈতিক দুই দলের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষে রণক্ষেত্র চিলোড়া বাজার ঢাকাস্থ চান্দিনা ছাত্র কল্যাণ সমিতির ২০২৫–২৬ অর্থবছরের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা উইন্ডোজের বিকল্প অপারেটিং সিস্টেম আনছে গুগল, পিসিতেই মিলবে অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ দক্ষিণ এশিয়ায় ভয়াবহ বন্যা ও ভূমিধস: নিহত প্রায় ৬০০, নিখোঁজ শতাধিক দেবিদ্বারে গাঁজাসহ স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা আটক কুমিল্লা ফুডপান্ডায় নিয়োগ, অভিজ্ঞতা ছাড়াও আবেদনের সুযোগ বুড়িচংয়ে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে বসতঘরসহ দুটি ঘর পুড়ে ছাই শ্রীলঙ্কায় জরুরি অবস্থা ঘোষণা অবস্থা ‘অপরিবর্তিত’ এখনও ‘শঙ্কামুক্ত নন’ বেগম খালেদা জিয়া মঞ্চে লাল গালিচার ব্যবহার কীভাবে এলো? জানুন এর ইতিহাস

ফিলিস্তিনিকে স্বীকৃতি দিচ্ছে পশ্চিমারা, বাস্তবে এটির কোনো প্রভাব থাকবে?

 

আগামী সোমবার জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের পূর্বে অস্ট্রেলিয়া, বেলজিয়াম, যুক্তরাজ্য, কানাডাসহ প্রায় ১০টি পশ্চিমা দেশ ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার ঘোষণা দিতে যাচ্ছে। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ প্রথম এ উদ্যোগের কথা জানান, যার পরপরই অন্যান্য দেশগুলো তার পদাঙ্ক অনুসরণ করে।

  • ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের বর্তমান অবস্থান

১৯৮৮ সালে ফিলিস্তিন লিবারেশন অর্গানাইজেশন (PLO) ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা করে। এরপর থেকেই দক্ষিণ গোলার্ধের বহু দেশ দ্রুত স্বীকৃতি দেয়। বর্তমানে জাতিসংঘের ১৯৩টি সদস্য দেশের মধ্যে ১৪৭টি দেশ ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিয়েছে। সর্বশেষ ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে মেক্সিকো এই তালিকায় যুক্ত হয়।

তবে জাতিসংঘে পূর্ণ সদস্যপদ পেতে হলে নিরাপত্তা পরিষদের অনুমোদন প্রয়োজন, যেখানে যুক্তরাষ্ট্রের ভেটো ক্ষমতা রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের বেশিরভাগ দেশ এতদিন দ্বিরাষ্ট্র সমাধানের ভিত্তিতে স্বীকৃতি দেওয়ার পক্ষে ছিল। কিন্তু ইসরায়েলের সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ড ও গাজায় চলমান সহিংসতার প্রেক্ষিতে তারা তাদের অবস্থান পুনর্বিবেচনা করছে।

  • ফিলিস্তিনের প্রশাসনিক কাঠামো

বর্তমানে ফিলিস্তিনের কূটনৈতিক মিশনগুলো পরিচালনা করে ফিলিস্তিন অথরিটি (PA), যার নেতৃত্বে রয়েছেন প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস। তার প্রশাসন পশ্চিমতীরের কিছু অংশে সীমিত ক্ষমতা প্রয়োগ করে, যা ইসরায়েলের সঙ্গে চুক্তির ভিত্তিতে পরিচালিত। PA ফিলিস্তিনিদের পাসপোর্ট প্রদান, স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতের দায়িত্ব পালন করে।

অন্যদিকে, গাজা উপত্যকা ২০০৭ সাল থেকে হামাসের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। ২০০৬ সালের নির্বাচনের পরবর্তী গৃহযুদ্ধে ফাতাহ মুভমেন্টকে বিতাড়িত করে হামাস ক্ষমতা গ্রহণ করে। যদিও PA এখনও গাজার সরকারি কর্মচারীদের বেতন প্রদান করে থাকে।

  • আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি ও সীমাবদ্ধতা

ফিলিস্তিনের জাতিসংঘে একটি পর্যবেক্ষক প্রতিনিধি দল রয়েছে, যাদের ভোটাধিকার নেই। ফলে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ও চুক্তি বাস্তবায়নে তাদের সীমাবদ্ধতা রয়ে গেছে। ইসরায়েল ফিলিস্তিনিদের জন্য পণ্য, বিনিয়োগ, শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক বিনিময়ের সুযোগ সীমিত করে রেখেছে। ফিলিস্তিনের কোনো নিজস্ব বিমানবন্দর নেই, এবং পশ্চিমতীর ও গাজায় প্রবেশের সব পথ ইসরায়েলের নিয়ন্ত্রণে।

See also  হংকংয়ের অগ্নিকাণ্ডটি ১০৭ বছরের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ, নিহত বেড়ে ৬৫

তবে ফিলিস্তিনের রাজধানী হিসেবে জেরুজালেমকে দাবি করা হলেও, অধিকাংশ দেশের কনস্যুলার অফিস রয়েছে রামাল্লাহ ও পূর্ব জেরুজালেমে। চীন, রাশিয়া, জাপান, জার্মানি, কানাডা, ডেনমার্ক, মিসর, জর্ডান, তিউনিশিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকার মতো দেশগুলো সেখানে ফিলিস্তিনি কনস্যুলার অফিস পরিচালনা করছে।

  • প্রতীকী না বাস্তবিক?

অনেকে পশ্চিমা দেশগুলোর স্বীকৃতিকে প্রতীকী পদক্ষেপ হিসেবে দেখলেও, ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ বলছে এটি কেবল প্রতীকী নয়, বরং সমতার ভিত্তিতে কূটনৈতিক অংশীদারত্বের সূচনা। যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রদূত হুসাম জমলত বলেন, এই স্বীকৃতি আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ভারসাম্য পুনর্গঠনে সহায়ক হতে পারে।

জেরুজালেমে সাবেক ব্রিটিশ কনসাল-জেনারেল ভিনসেন্ট ফিন মন্তব্য করেন, এই স্বীকৃতি ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক পুনর্মূল্যায়নের সুযোগ তৈরি করবে। যুক্তরাজ্যের ক্ষেত্রে এটি ইসরায়েলি বসতিগুলো থেকে আসা পণ্যের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের পথ খুলে দিতে পারে, যদিও ইসরায়েলি অর্থনীতিতে এর প্রভাব সীমিত থাকবে।

পশ্চিমা দেশগুলোর এই সম্মিলিত উদ্যোগ শুধু ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির প্রশ্ন নয়, বরং এটি একটি বৃহত্তর কূটনৈতিক বার্তা—যা ইসরায়েলের নীতির বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক চাপ তৈরির একটি কৌশল হিসেবেও দেখা যেতে পারে।

সূত্র: রয়টার্স

চান্দিনায় চুরির জেরে রাজনৈতিক দুই দলের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষে রণক্ষেত্র চিলোড়া বাজার

ফিলিস্তিনিকে স্বীকৃতি দিচ্ছে পশ্চিমারা, বাস্তবে এটির কোনো প্রভাব থাকবে?

১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৮:৪৪

 

আগামী সোমবার জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের পূর্বে অস্ট্রেলিয়া, বেলজিয়াম, যুক্তরাজ্য, কানাডাসহ প্রায় ১০টি পশ্চিমা দেশ ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার ঘোষণা দিতে যাচ্ছে। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ প্রথম এ উদ্যোগের কথা জানান, যার পরপরই অন্যান্য দেশগুলো তার পদাঙ্ক অনুসরণ করে।

  • ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের বর্তমান অবস্থান

১৯৮৮ সালে ফিলিস্তিন লিবারেশন অর্গানাইজেশন (PLO) ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা করে। এরপর থেকেই দক্ষিণ গোলার্ধের বহু দেশ দ্রুত স্বীকৃতি দেয়। বর্তমানে জাতিসংঘের ১৯৩টি সদস্য দেশের মধ্যে ১৪৭টি দেশ ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিয়েছে। সর্বশেষ ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে মেক্সিকো এই তালিকায় যুক্ত হয়।

তবে জাতিসংঘে পূর্ণ সদস্যপদ পেতে হলে নিরাপত্তা পরিষদের অনুমোদন প্রয়োজন, যেখানে যুক্তরাষ্ট্রের ভেটো ক্ষমতা রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের বেশিরভাগ দেশ এতদিন দ্বিরাষ্ট্র সমাধানের ভিত্তিতে স্বীকৃতি দেওয়ার পক্ষে ছিল। কিন্তু ইসরায়েলের সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ড ও গাজায় চলমান সহিংসতার প্রেক্ষিতে তারা তাদের অবস্থান পুনর্বিবেচনা করছে।

  • ফিলিস্তিনের প্রশাসনিক কাঠামো

বর্তমানে ফিলিস্তিনের কূটনৈতিক মিশনগুলো পরিচালনা করে ফিলিস্তিন অথরিটি (PA), যার নেতৃত্বে রয়েছেন প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস। তার প্রশাসন পশ্চিমতীরের কিছু অংশে সীমিত ক্ষমতা প্রয়োগ করে, যা ইসরায়েলের সঙ্গে চুক্তির ভিত্তিতে পরিচালিত। PA ফিলিস্তিনিদের পাসপোর্ট প্রদান, স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতের দায়িত্ব পালন করে।

অন্যদিকে, গাজা উপত্যকা ২০০৭ সাল থেকে হামাসের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। ২০০৬ সালের নির্বাচনের পরবর্তী গৃহযুদ্ধে ফাতাহ মুভমেন্টকে বিতাড়িত করে হামাস ক্ষমতা গ্রহণ করে। যদিও PA এখনও গাজার সরকারি কর্মচারীদের বেতন প্রদান করে থাকে।

  • আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি ও সীমাবদ্ধতা

ফিলিস্তিনের জাতিসংঘে একটি পর্যবেক্ষক প্রতিনিধি দল রয়েছে, যাদের ভোটাধিকার নেই। ফলে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ও চুক্তি বাস্তবায়নে তাদের সীমাবদ্ধতা রয়ে গেছে। ইসরায়েল ফিলিস্তিনিদের জন্য পণ্য, বিনিয়োগ, শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক বিনিময়ের সুযোগ সীমিত করে রেখেছে। ফিলিস্তিনের কোনো নিজস্ব বিমানবন্দর নেই, এবং পশ্চিমতীর ও গাজায় প্রবেশের সব পথ ইসরায়েলের নিয়ন্ত্রণে।

See also  দক্ষিণ এশিয়ায় ভয়াবহ বন্যা ও ভূমিধস: নিহত প্রায় ৬০০, নিখোঁজ শতাধিক

তবে ফিলিস্তিনের রাজধানী হিসেবে জেরুজালেমকে দাবি করা হলেও, অধিকাংশ দেশের কনস্যুলার অফিস রয়েছে রামাল্লাহ ও পূর্ব জেরুজালেমে। চীন, রাশিয়া, জাপান, জার্মানি, কানাডা, ডেনমার্ক, মিসর, জর্ডান, তিউনিশিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকার মতো দেশগুলো সেখানে ফিলিস্তিনি কনস্যুলার অফিস পরিচালনা করছে।

  • প্রতীকী না বাস্তবিক?

অনেকে পশ্চিমা দেশগুলোর স্বীকৃতিকে প্রতীকী পদক্ষেপ হিসেবে দেখলেও, ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ বলছে এটি কেবল প্রতীকী নয়, বরং সমতার ভিত্তিতে কূটনৈতিক অংশীদারত্বের সূচনা। যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রদূত হুসাম জমলত বলেন, এই স্বীকৃতি আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ভারসাম্য পুনর্গঠনে সহায়ক হতে পারে।

জেরুজালেমে সাবেক ব্রিটিশ কনসাল-জেনারেল ভিনসেন্ট ফিন মন্তব্য করেন, এই স্বীকৃতি ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক পুনর্মূল্যায়নের সুযোগ তৈরি করবে। যুক্তরাজ্যের ক্ষেত্রে এটি ইসরায়েলি বসতিগুলো থেকে আসা পণ্যের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের পথ খুলে দিতে পারে, যদিও ইসরায়েলি অর্থনীতিতে এর প্রভাব সীমিত থাকবে।

পশ্চিমা দেশগুলোর এই সম্মিলিত উদ্যোগ শুধু ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির প্রশ্ন নয়, বরং এটি একটি বৃহত্তর কূটনৈতিক বার্তা—যা ইসরায়েলের নীতির বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক চাপ তৈরির একটি কৌশল হিসেবেও দেখা যেতে পারে।

সূত্র: রয়টার্স