সোমবার, ০১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনামঃ
চান্দিনায় চুরির জেরে রাজনৈতিক দুই দলের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষে রণক্ষেত্র চিলোড়া বাজার ঢাকাস্থ চান্দিনা ছাত্র কল্যাণ সমিতির ২০২৫–২৬ অর্থবছরের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা উইন্ডোজের বিকল্প অপারেটিং সিস্টেম আনছে গুগল, পিসিতেই মিলবে অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ দক্ষিণ এশিয়ায় ভয়াবহ বন্যা ও ভূমিধস: নিহত প্রায় ৬০০, নিখোঁজ শতাধিক দেবিদ্বারে গাঁজাসহ স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা আটক কুমিল্লা ফুডপান্ডায় নিয়োগ, অভিজ্ঞতা ছাড়াও আবেদনের সুযোগ বুড়িচংয়ে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে বসতঘরসহ দুটি ঘর পুড়ে ছাই শ্রীলঙ্কায় জরুরি অবস্থা ঘোষণা অবস্থা ‘অপরিবর্তিত’ এখনও ‘শঙ্কামুক্ত নন’ বেগম খালেদা জিয়া মঞ্চে লাল গালিচার ব্যবহার কীভাবে এলো? জানুন এর ইতিহাস

জীবন্ত গাছে সাঁটানো বিজ্ঞাপন, প্রকৃতির গায়ে ‘পেরেকের ক্ষত’

  • Reporter Name
  • ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২:৫৩
  • 9

অনলাইন ডেস্ক:

কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলায় প্রতিটি সড়ক যেন এখন একেকটি অবৈধ বিজ্ঞাপন কেন্দ্র। সড়কের দুই পাশে সারি সারি গাছের গায়ে পেরেক ঠুকে ঝুলানো হচ্ছে রাজনৈতিক দলের পোস্টার, বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান- রাজনৈতিক বিলবোর্ড ও সাইনবোর্ড। এতে যেমন গাছ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, তেমনি পরিবেশও মারাত্মক হুমকির মুখে পড়ছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, চান্দিনা উপজেলা পরিষদ চত্বর থেকে শুরু করে থানা, ভূমি অফিস, ইউনিয়ন পরিষদ, স্কুল-কলেজের আশপাশের গাছ, এমনকি ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক সংলগ্ন সৌন্দর্যবর্ধক গাছেও ঝুলছে এসব প্রচারসামগ্রী। কোথাও ব্যানার, কোথাও আবার হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সাইনবোর্ড পেরেক দিয়ে গেঁথে রাখা হয়েছে। ফলে গাছগুলো ধীরে ধীরে রোগাক্রান্ত হয়ে শুকিয়ে যাচ্ছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জীবন্ত গাছে পেরেক ঠোকা বন ও পরিবেশ আইন অনুযায়ী দণ্ডনীয় অপরাধ। বড় পেরেক গাছের অভ্যন্তরীণ কোষ ধ্বংস করে দেয়, এতে গাছ স্বাভাবিকভাবে খাদ্য গ্রহণ করতে পারে না এবং ধীরে ধীরে মারা যায়। দীর্ঘ ১৫-২০ বছরে বড় হওয়া একটি গাছ এভাবে একদিনের প্রচারণার জন্য ধ্বংস করে ফেলা হচ্ছে। এটি শুধু গাছ নয়, মানুষের বিবেককেও আঘাত করছে।

জাতীয় পরিবেশ পদকপ্রাপ্ত অধ্যাপক মতিন সৈকত এআইপি বলেন, “গাছ আমাদের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। এগুলো শুধু ছায়া দেয় না; অক্সিজেন সরবরাহ করে, কার্বনডাইঅক্সাইড শোষণ করে এবং জীববৈচিত্র্য রক্ষা করে। গাছের ওপর এমন নির্যাতন মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের সামিল। প্রশাসনের উচিত অবিলম্বে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া।”

স্থানীয় পরিবেশ সচেতন মহলও এ ধরনের কর্মকাণ্ডকে ‘প্রকৃতির বিরুদ্ধে নগ্ন হামলা’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। তাদের অভিযোগ, প্রশাসনের নীরবতার সুযোগেই গাছে নির্বিচারে বিজ্ঞাপন সাঁটানো হচ্ছে।

এ বিষয়ে চান্দিনা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ আশরাফুল হক জানান,

“জীবন্ত গাছে পেরেক ঠোকা আইনত নিষিদ্ধ। যেসব গাছে এভাবে প্রচারসামগ্রী লাগানো হয়েছে তা খুঁজে বের করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

পরিবেশবিদদের মতে, একটি গাছ ধ্বংস হওয়া মানে শুধু সবুজ হারানো নয়; বরং এর ফলে জীববৈচিত্র্যের ভারসাম্য নষ্ট হয়, বায়ুদূষণ বেড়ে যায়, তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায় এবং মানুষ প্রাকৃতিক দুর্যোগের প্রতি আরও বেশি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে। তাই জীবন্ত গাছকে বিজ্ঞাপনের বোর্ডে পরিণত করা বন্ধে সামাজিক সচেতনতা এবং প্রশাসনিক কঠোর নজরদারি এখন সময়ের দাবি।

See also  এলডিপি থেকে সদ্য বহিষ্কৃত নেতার বিরুদ্ধে নারীদের বিক্ষোভ, থানায় একাধিক মামলা দায়ের

 

চান্দিনায় চুরির জেরে রাজনৈতিক দুই দলের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষে রণক্ষেত্র চিলোড়া বাজার

জীবন্ত গাছে সাঁটানো বিজ্ঞাপন, প্রকৃতির গায়ে ‘পেরেকের ক্ষত’

১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২:৫৩

অনলাইন ডেস্ক:

কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলায় প্রতিটি সড়ক যেন এখন একেকটি অবৈধ বিজ্ঞাপন কেন্দ্র। সড়কের দুই পাশে সারি সারি গাছের গায়ে পেরেক ঠুকে ঝুলানো হচ্ছে রাজনৈতিক দলের পোস্টার, বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান- রাজনৈতিক বিলবোর্ড ও সাইনবোর্ড। এতে যেমন গাছ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, তেমনি পরিবেশও মারাত্মক হুমকির মুখে পড়ছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, চান্দিনা উপজেলা পরিষদ চত্বর থেকে শুরু করে থানা, ভূমি অফিস, ইউনিয়ন পরিষদ, স্কুল-কলেজের আশপাশের গাছ, এমনকি ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক সংলগ্ন সৌন্দর্যবর্ধক গাছেও ঝুলছে এসব প্রচারসামগ্রী। কোথাও ব্যানার, কোথাও আবার হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সাইনবোর্ড পেরেক দিয়ে গেঁথে রাখা হয়েছে। ফলে গাছগুলো ধীরে ধীরে রোগাক্রান্ত হয়ে শুকিয়ে যাচ্ছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জীবন্ত গাছে পেরেক ঠোকা বন ও পরিবেশ আইন অনুযায়ী দণ্ডনীয় অপরাধ। বড় পেরেক গাছের অভ্যন্তরীণ কোষ ধ্বংস করে দেয়, এতে গাছ স্বাভাবিকভাবে খাদ্য গ্রহণ করতে পারে না এবং ধীরে ধীরে মারা যায়। দীর্ঘ ১৫-২০ বছরে বড় হওয়া একটি গাছ এভাবে একদিনের প্রচারণার জন্য ধ্বংস করে ফেলা হচ্ছে। এটি শুধু গাছ নয়, মানুষের বিবেককেও আঘাত করছে।

জাতীয় পরিবেশ পদকপ্রাপ্ত অধ্যাপক মতিন সৈকত এআইপি বলেন, “গাছ আমাদের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। এগুলো শুধু ছায়া দেয় না; অক্সিজেন সরবরাহ করে, কার্বনডাইঅক্সাইড শোষণ করে এবং জীববৈচিত্র্য রক্ষা করে। গাছের ওপর এমন নির্যাতন মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের সামিল। প্রশাসনের উচিত অবিলম্বে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া।”

স্থানীয় পরিবেশ সচেতন মহলও এ ধরনের কর্মকাণ্ডকে ‘প্রকৃতির বিরুদ্ধে নগ্ন হামলা’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। তাদের অভিযোগ, প্রশাসনের নীরবতার সুযোগেই গাছে নির্বিচারে বিজ্ঞাপন সাঁটানো হচ্ছে।

এ বিষয়ে চান্দিনা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ আশরাফুল হক জানান,

“জীবন্ত গাছে পেরেক ঠোকা আইনত নিষিদ্ধ। যেসব গাছে এভাবে প্রচারসামগ্রী লাগানো হয়েছে তা খুঁজে বের করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

পরিবেশবিদদের মতে, একটি গাছ ধ্বংস হওয়া মানে শুধু সবুজ হারানো নয়; বরং এর ফলে জীববৈচিত্র্যের ভারসাম্য নষ্ট হয়, বায়ুদূষণ বেড়ে যায়, তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায় এবং মানুষ প্রাকৃতিক দুর্যোগের প্রতি আরও বেশি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে। তাই জীবন্ত গাছকে বিজ্ঞাপনের বোর্ডে পরিণত করা বন্ধে সামাজিক সচেতনতা এবং প্রশাসনিক কঠোর নজরদারি এখন সময়ের দাবি।

See also  চান্দিনায় হাফেজদের পাগড়ি প্রদান অনুষ্ঠানে ‘লাইটার’ স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সম্মাননা