
আবু সাঈদ:
কুমিল্লার চান্দিনায় দেশের মহান নেতা থেকে স্বৈরাচার হয়ে উঠা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৫০তম মৃত্যুবার্ষিকীতে মিলাদ, মাহফিল ও দোয়ানুষ্ঠানের আয়োজন করেছেন নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতা সাইফুদ্দিন সুজন। তিনি উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক। শুক্রবার (১৫ আগস্ট) বাদ জুমা মহিচাইল ইউনিয়নের পরচঙ্গা সামাদরগা রহমানিয়া নূরানী হাফিজিয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানায় এ দোয়ানুষ্ঠান পরিচালনা করা হয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া লাইভ ভিডিওতে দেখা যায়, অনুষ্ঠানে কোমলমতি শিশুরাও উপস্থিত ছিলেন এবং শেষের দিকে তাদের মাঝে খাবার বিতরণ করা হয়।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতা সাইফুদ্দিন সুজন পরচঙ্গা গ্রামের মৃত সোহেল আহম্মেদ মেম্বারের ছেলে। ২০১৪ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত তিনি উপজেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। পরে তার আর কোন পদ-পদবী ছিল না। তিনি কুমিল্লা উত্তর জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এবং পরবর্তীতে যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক সারোয়ার হোসেন বাবুর অনুসারী হিসেবে পরিচিত। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট স্বৈরশাসক শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর তার বিরুদ্ধে চান্দিনা থানায় একাধিক মামলা দায়ের করা হয়।
চান্দিনা থানার অফিসার ইন-চার্জ (ওসি) মো. জাবেদ উল ইসলাম জানিয়েছেন, বিষয়টি তাদের নজরে এসেছে। থানা পুলিশ ঘটনাস্থল ও তার গ্রামের বাড়ি সহ আশপাশের এলাকায় অভিযান চালিয়েও তাকে খুঁজে পায়নি। বর্তমানে তিনি পলাতক রয়েছেন। তিনি আরও জানান, সম্প্রতি সাইফুদ্দিন সুজনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল, তবে আদালত থেকে তিনি জামিন পেয়েছেন।
নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা মনে করছেন, দেশের রাজনৈতিক ক্ষেত্রে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ ও নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের বিভিন্ন শাখা দীর্ঘদিন ধরে উস্কানি, সন্ত্রাস এবং সামাজিক অস্থিরতা তৈরিতে যুক্ত। সরকারি হিসেবে নিষিদ্ধ হলেও এ ধরনের কর্মকাণ্ড প্রমাণ করে যে, তাদের কার্যক্রম এখনও দেশে প্রভাব বিস্তার করছে এবং সাধারণ মানুষ, বিশেষ করে শিশু ও শিক্ষার্থীদের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।
বাংলাদেশে রাজনৈতিক সংগঠনগুলোর নিয়ন্ত্রণ ও নিষিদ্ধকরণের প্রক্রিয়া স্বচ্ছ ও শক্তভাবে পরিচালিত হচ্ছে, যাতে দেশের সামাজিক ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা রক্ষা পায়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রাজনৈতিক সন্ত্রাস ও অরাজকতার বিরুদ্ধে দৃঢ় পদক্ষেপ গ্রহণ ছাড়া দেশের নিরাপত্তা ও শান্তি বজায় রাখা কঠিন।
চান্দিনার এই ঘটনা দেশের রাজনৈতিক সংগঠনগুলোকে কঠোরভাবে নজরদারি এবং প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের গুরুত্ব দেয়া উচিত বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
Reporter Name 












