
চান্দিনা মেইল অনলাইনঃ
রাশিয়ার পূর্বাঞ্চলীয় কামচাটকা অঞ্চলে বুধবার ভোরে রিখটার স্কেলে ৮.৮ মাত্রার একটি ভয়াবহ ভূমিকম্প আঘাত হানার পর প্রশান্ত মহাসাগরজুড়ে সুনামির আশঙ্কায় কয়েকটি দেশ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। এর ফলে জাপান, যুক্তরাষ্ট্র, তাইওয়ান, ফিলিপাইন, ইন্দোনেশিয়া, চীন, পেরু এবং ইকুয়েডরসহ বহু উপকূলীয় অঞ্চল সুনামির ঝুঁকিতে রয়েছে বলে জানানো হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন, এই বিপর্যয় ২৪ ঘণ্টারও বেশি সময় স্থায়ী হতে পারে।
জাপানের আবহাওয়া সংস্থার মতে, কামচাটকার ভূমিকম্পের পর ৪ মিটার (১২ ফুট) উচ্চতার ঢেউ জাপানের সর্বউত্তরের দ্বীপ হোক্কাইডোতে আঘাত হানে। বর্তমানে দেশের উত্তর ও পূর্বাঞ্চলের উপকূলে ২ থেকে ৩ ফুট উচ্চতার ঢেউ আছড়ে পড়ছে। সুনামির সম্ভাব্য বিপদের কারণে রাজধানী টোকিওসহ উপকূলীয় ও নিকটবর্তী অঞ্চলগুলো থেকে প্রায় ২০ লাখ মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে। হোক্কাইডো, কানাগাওয়া এবং ওয়াকায়েমা অঞ্চল থেকে সবচেয়ে বেশি মানুষ সরানো হচ্ছে বলে জানানো হয়েছে।
সুনামির কারণে জাপানের সেন্দাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সাময়িকভাবে সব কার্যক্রম স্থগিত করেছে। একইসঙ্গে হোক্কাইডো, ওমোরি এবং টোকিওর মধ্যে ফেরি চলাচলও বন্ধ রাখা হয়েছে। কর্মকর্তারা আশঙ্কা করছেন, জোয়ারের সময় ঢেউয়ের উচ্চতা ও তীব্রতা আরও বাড়তে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের কোস্টগার্ড হাওয়াইয়ের সব বাণিজ্যিক বন্দর থেকে জাহাজ সরিয়ে নিতে নির্দেশ দিয়েছে। হনলুলুর কোস্টগার্ড ক্যাপ্টেন জানিয়েছেন, সব বন্দরেই বাহির থেকে নতুন জাহাজ প্রবেশ আপাতত নিষিদ্ধ করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের জরুরি ব্যবস্থাপনা বিভাগ হুঁশিয়ারি দিয়েছে, “বিধ্বংসী সুনামি ঢেউয়ের” আশঙ্কায় হাওয়াইয়ের কিছু উপকূলীয় অঞ্চল থেকে লোকজনকে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে।
প্রশান্ত মহাসাগরের বিস্তৃত অঞ্চলজুড়ে এখন সুনামি সতর্কতা জারি রয়েছে। তাইওয়ান, ফিলিপাইন, ইন্দোনেশিয়া, পেরু, ইকুয়েডর ও চীনও উপকূলীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছে। জাপানের আবহাওয়া সংস্থা জানিয়েছে, ভবিষ্যৎ কয়েক ঘণ্টা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, বিশেষ করে জোয়ারের সময় ঢেউয়ের আচরণ পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।
ভার্জিনিয়া টেক বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনামি গবেষক রবার্ট ওয়েইস বলেন, “এই ভূমিকম্প অত্যন্ত শক্তিশালী এবং এর সৃষ্ট সুনামি পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়াটাই স্বাভাবিক।” ইউএস জিওলজিক্যাল সার্ভে জানিয়েছে, ভূমিকম্পের উৎসস্থল ছিল পেট্রোপাভলোভস্ক-কামচাটস্কির পূর্বে ১৩৬ কিলোমিটার দূরে। পরবর্তীতে আরও দুটি আফটারশক রেকর্ড করা হয়েছে— যথাক্রমে ৬.৯ এবং ৬.৩ মাত্রার।
জাপানসহ উপকূলীয় দেশগুলোর প্রশাসন নাগরিকদের সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বনের আহ্বান জানিয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে এবং ক্ষয়ক্ষতি কমাতে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো জরুরি পদক্ষেপ নিচ্ছে।
Reporter Name 













