
স্টাফ রিপোর্টারঃ
পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে সারাদেশের মতো কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলাতেও জমে উঠতে শুরু করেছে কোরবানির পশুর হাট। তবে একটানা বৃষ্টিপাতের কারণে হাটগুলোতে এখনও আশানুরূপ ক্রেতার উপস্থিতি দেখা যাচ্ছে না। এতে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন গরু ব্যবসায়ী, খামারি ও কৃষকরা।
চান্দিনার ছায়কোট, মাধাইয়া, এতবারপুর, রামমোহন, দোল্লাই নবাবপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় বসেছে অস্থায়ী ও নিয়মিত পশুর হাট। এসব হাটে স্থানীয় খামারি ও কৃষকদের পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন জেলা—পাবনা, সিরাজগঞ্জ, ময়মনসিংহ, জামালপুর, রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জসহ নানা অঞ্চল থেকে আনা হয়েছে বিভিন্ন জাতের গরু। বাজারজুড়ে শাহীওয়াল, ফ্রিজিয়ান, দেশি জাতের ষাঁড়, মহিষ ও ছাগলের আধিক্য দেখা গেছে।
ব্যবসায়ীরা জানান, গরুর সরবরাহ পর্যাপ্ত হলেও টানা বৃষ্টির কারণে হাটে ক্রেতার সংখ্যা কম। অনেক ক্রেতা কাদা ও পানিতে চলাচলের ভোগান্তি এড়াতে হাটে এসে ফিরে যাচ্ছেন। ফলে প্রত্যাশামতো বিক্রি হচ্ছে না, যা ব্যবসায়ীদের মধ্যে ক্ষতির আশঙ্কা বাড়িয়ে দিচ্ছে।
পাবনা থেকে আসা বিক্রেতা মো. শামসুল হক বলেন, “প্রতি বছর চান্দিনার হাটে ভালো বিক্রি হয়। কিন্তু এবার বৃষ্টির কারণে ক্রেতা কম। গরু খাওয়ানো ও রাখার খরচ বেড়েছে, কিন্তু বিক্রি নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।”
একই উদ্বেগ জানিয়েছেন স্থানীয় খামারি আবু তাহের। তিনি বলেন, “বছরের পর বছর গরু লালন-পালন করি কোরবানির মৌসুমে বিক্রির জন্য। কিন্তু যদি বৃষ্টির কারণে ক্রেতা না আসে, তাহলে বড় ধরনের লোকসান হবে।”
অন্যদিকে, ক্রেতাদের মধ্যে দেখা গেছে ভিন্নচিত্র। অনেকেই বলছেন, এ বছর গরুর দাম অন্যান্য বছরের তুলনায় তুলনামূলকভাবে কম। তারা আশা করছেন, অল্প খরচে ভালো মানের কোরবানির পশু কেনা সম্ভব হবে।
চান্দিনা থানা পুলিশ পশুর হাটে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নিয়মিত টহল দিচ্ছে। পাশাপাশি হাট পরিচালনাকারী কর্তৃপক্ষও স্বেচ্ছাসেবক দল মোতায়েন করেছে, যারা সার্বক্ষণিক তদারকিতে রয়েছে, যাতে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে।
ব্যবসায়ীদের জন্য হাটে অস্থায়ীভাবে থাকার ও খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। তবে বৃষ্টির কারণে এসব ব্যবস্থাও কিছুটা দুর্ভোগে পরিণত হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন অনেকে।
স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে, হাটের সার্বিক নিরাপত্তা ও ব্যবস্থাপনার দিকটি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। তবে আবহাওয়া যদি অনুকূলে না আসে, তাহলে পশুর হাটে কাঙ্ক্ষিত বেচাকেনা ব্যাহত হতে পারে।
চান্দিনার পশুর হাটে ঈদের আগে উৎসবমুখর পরিবেশ তৈরির আশা থাকলেও তা এখনো পুরোপুরি দেখা যাচ্ছে না। তবে ব্যবসায়ী ও খামারিরা আশাবাদী, শেষ কয়েক দিনে আবহাওয়া ভালো থাকলে পশু বিক্রিতে গতি আসবে এবং বাজারে প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে আসবে।
Reporter Name 











