
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রার্থী তালিকা নিয়ে বড় ধরনের রদবদল শুরু করেছে জামায়াতে ইসলামী। ৫ দফা দাবিতে যুগপৎ আন্দোলনে শরিক ৭টি দলের জন্য নিজেদের পূর্বঘোষিত তালিকা থেকে ৮০ থেকে ১০০টি আসন ছেড়ে দিতে পারে দলটি। নির্ভরযোগ্য সূত্রের খবর অনুযায়ী, জোটের ঐক্যের স্বার্থে এবং জয়ের সম্ভাবনা যাচাই করে এই বিশাল সংখ্যক আসনে রদবদল চলছে।
প্রাথমিকভাবে জামায়াত যে ১৩০টি আসনে প্রার্থী দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছিল, জোটগত সমঝোতার কারণে তা সংকুচিত হতে যাচ্ছে। আসন ছাড়ার এই সিদ্ধান্তটি নেওয়া হয়েছে মূলত ‘জুলাই সনদ’ বাস্তবায়নের দাবিতে চলমান অভিন্ন আন্দোলনের অংশ হিসেবে। আসন সমঝোতা নিয়ে কিছুটা জটিলতা থাকলেও, ইসলামি ঐক্যের স্বার্থে শরিক দলগুলো ছাড় দেওয়ার মানসিকতা দেখাচ্ছে বলে জানা গেছে।
জয়ের সম্ভাবনাই মূল মানদণ্ড: জামায়াত, প্রার্থী পরিবর্তনের বিষয়ে জামায়াত নেতা অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব যোবায়ের জানিয়েছেন, “সংখ্যা নয়, জয়ের সম্ভাবনাই প্রার্থী নির্বাচনের মূল মানদণ্ড। বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের প্রতিনিধিত্ব ও মাঠপর্যায়ের জনসমর্থন যাচাইয়ের ভিত্তিতে এই রদবদল প্রক্রিয়া চলমান।”
বর্তমানে ৮ দলীয় জোট একক প্রার্থী চূড়ান্তকরণের দিকে এগোচ্ছে। জোটের অভ্যন্তরীণ জরিপে কোন দলের প্রার্থীর বিজয়ী হওয়ার সম্ভাবনা বেশি, তার ভিত্তিতেই আসন বণ্টন চূড়ান্ত করা হবে। প্রাথমিক আলোচনা অনুযায়ী, ইসলামী আন্দোলন ১২০টি, জামায়াত ১৩০টি এবং বাকি ৫০টি আসনে অন্য শরিক দলগুলো প্রার্থী দিতে আগ্রহী। এর মধ্যে খেলাফত আন্দোলন একাই ২০টি আসন দাবি করছে। খেলাফত মজলিস, নেজামে ইসলাম পার্টি, জাগপা ও বিডিপিসহ অন্যান্য দলও নিজেদের মতো করে মাঠ জরিপ পরিচালনা করছে।
দলের আমির ডা. শফিকুর রহমানসহ বেশ কয়েকজন শীর্ষ নেতা রাজধানী ঢাকায় প্রার্থী হচ্ছেন। পাশাপাশি, জামায়াতের তালিকায় এবার উল্লেখযোগ্য বৈচিত্র্য দেখা যাচ্ছে। ইতোমধ্যে দুইজন হিন্দু প্রার্থীসহ বিভিন্ন ধর্মাবলম্বী ও উপজাতি গোষ্ঠী থেকে ৪ থেকে ৫ জনকে চূড়ান্ত বিবেচনায় রাখা হয়েছে। বিশেষত, রাঙামাটি, বান্দরবন ও খাগড়াছড়ির পার্বত্য অঞ্চলে ডাকসুর কয়েকজন সাবেক নেতার নাম আলোচনায় এসেছে।
অভ্যন্তরীণ পরিবর্তনের অংশ হিসেবে ইতিমধ্যে হবিগঞ্জ-৪ এবং কুড়িগ্রামসহ কয়েকটি আসনে নতুন প্রার্থী চূড়ান্ত করা হয়েছে। তালিকায় নারী প্রার্থী এবং ‘জুলাই যোদ্ধা’ হিসেবে পরিচিত আন্দোলনকারী কর্মীরাও যুক্ত হবেন। শরিক দলের সমঝোতা ও নিজেদের অভ্যন্তরীণ সংস্কার মিলিয়ে ৮০ থেকে ১০০ জন প্রার্থী তালিকা থেকে বাদ পড়ছেন—এই সংখ্যাটি নির্ভরযোগ্য সূত্র নিশ্চিত করেছে।
অনলাইন ডেস্ক 


















