
চান্দিনা উপজেলা পৌরসভা মধ্য বাজারে অবস্থিত ব্র্যাক ব্যাংক পিএলসি শাখায় বুধবার (০৩ ডিসেম্বর) সকালে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এতে ব্যাংকের সার্ভার কক্ষের গুরুত্বপূর্ণ আইটি অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হলেও লকার ও গ্রাহকদের নথিপত্র সম্পূর্ণ সুরক্ষিত রয়েছে। তবে ধোঁয়া ও পরিবেশ স্বাভাবিক করার কারণে দিনভর শাখাটির সব ধরনের কার্যক্রম বন্ধ থাকে।
বুধবার সকাল আনুমানিক ৭টা ৪৫ মিনিটের দিকে উপজেলা সদরের মধ্য বাজারে জয়নাল সুপার মার্কেটের দ্বিতীয় তলায় অবস্থিত ব্র্যাক ব্যাংক শাখা থেকে ধোঁয়া বের হতে দেখেন স্থানীয়রা। সাথে সাথেই ফায়ার সার্ভিসে খবর দেওয়া হয়। চান্দিনা ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে। প্রায় চার ঘণ্টার নিরলস প্রচেষ্টায় আগুন সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আসে।
ব্যাংক কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করেছে যে, অগ্নিকাণ্ডে মূলত সার্ভার কক্ষের বেশ কিছু আইটি যন্ত্রাংশ, বৈদ্যুতিক তার এবং নেটওয়ার্ক সংযোগ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে স্বস্তির বিষয় এই যে, ব্যাংকের মূল কক্ষ, গ্রাহকদের ভল্ট (লকার) এবং সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র আগুনের স্পর্শ থেকে সম্পূর্ণ অক্ষত রয়েছে।
ব্যাংক শাখার ম্যানেজার মো. রফিকুল ইসলাম খান জানান, প্রাথমিকভাবে আমাদের ধারণা, সার্ভার কক্ষে বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকেই ধোঁয়ার সূত্রপাত হয়। দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ায় আমরা বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে পেরেছি। ধোঁয়া অপসারণ ও পরিবেশ স্বাভাবিক করার জন্য নিরাপত্তার স্বার্থে আমরা দিনভর ব্যাংকিং কার্যক্রম বন্ধ রাখতে বাধ্য হয়েছি।” তিনি গ্রাহকদের আশ্বস্ত করে বলেন, সকল গ্রাহকের হিসাব, লকার ও নথি সম্পূর্ণ নিরাপদ আছে।
চান্দিনা ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার ইমাম হোসেন পাটোয়ারী অগ্নিকাণ্ডের কারণ হিসেবে বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিটকেই প্রাথমিক ধারণা হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, “আগুন লাগার খবর পাওয়ার পরপরই আমাদের দুটি ইউনিট কাজ শুরু করে। দীর্ঘ প্রচেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়। বিস্তারিত তদন্ত শেষে ক্ষয়ক্ষতির সঠিক তথ্য জানা যাবে।
সপ্তাহের মাঝখানে হঠাৎ ব্যাংক বন্ধ হয়ে যাওয়ায় গ্রাহকদের চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়। লেনদেন, টাকা উত্তোলন বা জমা দেওয়ার উদ্দেশ্যে আসা বহু গ্রাহক ব্যাংকের সামনে থেকে ফিরে যেতে বাধ্য হন।
মহিচাইল এলাকার গ্রাহক সেলিম আকতার বলেন, বিকেলে টাকার প্রয়োজন হবে, তাই সকালে ব্যাংকে এসেছিলাম। বন্ধ দেখে ভয় পেলাম যে আমাদের জমার কোনো সমস্যা হলো কিনা।
স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান, সপ্তাহের শেষ দিকে দৈনন্দিন বিক্রির টাকা জমা দেওয়ার ক্ষেত্রে এই আকস্মিক বন্ধের কারণে তাদের লেনদেন কার্যক্রম ব্যাহত হয়েছে।
ব্যাংক কর্তৃপক্ষ ক্ষতিগ্রস্ত সার্ভার কক্ষ দ্রুত মেরামত করে এবং নতুন যন্ত্রপাতি স্থাপনের মাধ্যমে যত দ্রুত সম্ভব স্বাভাবিক কার্যক্রম চালু করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। গ্রাহকদের যেকোনো জিজ্ঞাসা বা লেনদেন সংক্রান্ত সাহায্যের জন্য বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়েও তারা কাজ করছেন।
নিজস্ব প্রতিবেদক 


















