বিশ্বজুড়ে আভিজাত্য, সম্মাননা ও ক্ষমতার দৃশ্যমান প্রতীক হিসেবে ‘রেড কার্পেট’ বা লালগালিচা আজ সর্বজনবিদিত। রাষ্ট্রীয় সংবর্ধনা থেকে শুরু করে রাজনৈতিক মঞ্চ কিংবা বিনোদন জগতের জৌলুসপূর্ণ আয়োজন—সর্বত্রই লালগালিচার ব্যবহার এখন একটি প্রতিষ্ঠিত রীতি। তবে আধুনিক সভ্যতায় এর বহুল ব্যবহার দেখা গেলেও, এই প্রথার শেকড় প্রোথিত রয়েছে সুপ্রাচীন ইতিহাসে। ঐতিহাসিক দলিলাদি ও সাহিত্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, লালগালিচায় হাঁটার প্রথাটি অত্যন্ত প্রাচীন। খ্রিস্টপূর্ব ৪৫৮ অব্দে গ্রিক নাট্যকার ইস্কাইলাস রচিত ‘অ্যাগামেমনন’ ট্র্যাজেডিতে এর প্রথম উল্লেখ পাওয়া যায়। নাটকের কাহিনি অনুযায়ী, ট্রোজান যুদ্ধে বিজয়ী সম্রাট আগামেমনন যখন দেশে ফিরে আসেন, তখন সম্রাজ্ঞীর নির্দেশে তাঁকে রাজকীয় অভ্যর্থনা জানাতে পথে লাল গালিচা বিছিয়ে দেওয়া হয়। এই ঘটনা প্রমাণ করে যে, আধুনিক যুগের বহু পূর্ব থেকেই রাজকীয় সম্মান প্রদর্শনে লালগালিচার প্রচলন ছিল। মধ্যযুগীয় ইউরোপে লাল রংকে আভিজাত্য, ক্ষমতা ও ঐশ্বর্যের প্রতীক হিসেবে গণ্য করা হতো। সেই সময়ের সামাজিক মর্যাদাবোধের প্রতিফলন দেখা যায় রেনেসাঁ যুগের শিল্পকর্মেও। তৎকালীন বহু চিত্রকর্মে সাধু, সম্রাট এবং উচ্চবংশীয় অভিজাত ব্যক্তিদের পায়ের নিচে লাল গালিচার উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়, যা তাঁদের বিশেষ সামাজিক অবস্থানকে নির্দেশ করত। আধুনিক যুগে রাষ্ট্রীয় প্রটোকলে লালগালিচার আনুষ্ঠানিক ব্যবহার শুরু হয় ১৮২১ সালে। যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জেমস মনরো যখন সাউথ ক্যারোলাইনা সফরে যান, তখন তাঁকে স্বাগত জানাতে প্রথমবারের মতো আনুষ্ঠানিকভাবে লাল গালিচা ব্যবহার করা হয়। এরপর থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে উচ্চপদস্থ রাষ্ট্রীয় অতিথিদের সম্মান জানাতে এটি নিয়মিত অনুষঙ্গ হয়ে...