
বিএনপির দুই গ্রুপের ঘোষিত পৃথক সমাবেশকে কেন্দ্র করে কুমিল্লা টাউন হল ও আশপাশের এলাকায় সোমবার সকাল থেকেই উত্তেজনাপূর্ণ পরিবেশ বিরাজ করছে। সম্ভাব্য সংঘাত এড়াতে পুলিশের পাশাপাশি সেনাবাহিনী ও র্যাবকে কড়া নিরাপত্তায় মোতায়েন করা হয়েছে। শহরজুড়ে টহল, চেকপোস্ট এবং বাড়তি নজরদারির কারণে সাধারণ মানুষের চলাচলেও কিছুটা সতর্কতা লক্ষ্য করা গেছে।
বুধবার সন্ধ্যা থেকেই টাউন হল এলাকায় কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়। রাত ১০টায় রিপোর্ট তৈরি পর্যন্ত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকলেও দু’পক্ষের কর্মীদের মাঝে উত্তেজনা অব্যাহত ছিল। মনিরুল হক চৌধুরী সমর্থিত গ্রুপের নেতাকর্মীরা টাউন হল চত্বরে অবস্থান নিয়ে স্লোগান দিতে থাকেন। অপরদিকে, হাজী আমিন উর রশিদ ইয়াছিনের পক্ষের কর্মীদের আনাগোনা থাকলেও এখন পর্যন্ত কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা জানিয়েছেন – দুই পক্ষের সমাবেশ একই স্থানে অনুষ্ঠিত হওয়ায় উত্তেজনা বাড়ার আশঙ্কা ছিল। এ কারণে শুরু থেকেই তারা সতর্ক অবস্থানে থেকেছেন। সেনাবাহিনী ও র্যাবের উপস্থিতি এলাকায় স্বস্তি আনলেও সম্ভাব্য সংঘাত নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে উদ্বেগ বিরাজ করছে।
টাউন হল এলাকার দোকানপাট ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান স্বাভাবিকভাবে খোলা থাকলেও মানুষের উপস্থিতি ছিল তুলনামূলকভাবে কম। সকাল থেকে নিরাপত্তা বাহিনীর টহল ও নজরদারি অব্যাহত থাকায় পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. সাইফুল মালিক বলেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে আমরা সর্বোচ্চ সতর্কতায় আছি। যেকোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঠেকাতে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। এখন পর্যন্ত কোনো বড় ধরনের সমস্যা হয়নি, পরিস্থিতি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সম্ভাব্য প্রার্থী মনিরুল হক চৌধুরী আগেই টাউন হল মাঠে নির্বাচনী গণসংযোগের অনুমতি নিয়েছিলেন। অন্যদিকে, মনোনয়ন বঞ্চিত হাজী আমিন–উর–রশিদ ইয়াছিনের পক্ষে আদর্শ সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শফিউল আলম রায়হানও একই স্থানে সমাবেশের জন্য কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেন। এতে দুই পক্ষই সমাবেশের প্রস্তুতি নিতে শুরু করলে মাঠে উত্তেজনা তৈরি হয়।
কর্মীদের অবস্থানসংক্রান্ত বিরোধ, বাক-বিতণ্ডা ও বিভিন্ন গুজব ছড়িয়ে পড়ায় পুরো শহরজুড়ে সংঘর্ষের আশঙ্কা দেখা দেয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে নিরাপত্তা বাহিনী সকাল থেকেই সমাবেশস্থল ও গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় কড়াকড়ি জারি করে।
আজ ২০ নভেম্বর কুমিল্লা টাউন হল মাঠেই দু’পক্ষের ঘোষিত সমাবেশ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকায় সর্বস্তরে উদ্বেগ বিরাজ করছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জানিয়েছে, শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখতে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে এবং যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় তারা প্রস্তুত।
নিজস্ব প্রতিবেদক 









