বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের কোচিং প্যানেলে নতুন সংযোজন মোহাম্মদ আশরাফুল। সাবেক অধিনায়ক ও অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান এবার জাতীয় দলের ব্যাটিং কোচ হিসেবে দায়িত্ব নিচ্ছেন আসন্ন আয়ারল্যান্ড সিরিজে। বিসিবির এই নিয়োগের মাধ্যমে আশরাফুলের কোচিং ক্যারিয়ার নতুন মোড় নিচ্ছে, যদিও খেলোয়াড় পরিচয়টা তিনি পুরোপুরি ছাড়েননি।

গত দুই মৌসুমে ইংল্যান্ডের সাউদার্ন প্রিমিয়ার লিগে পোর্টসমাউথ ক্রিকেট ক্লাবের হয়ে খেলেছেন আশরাফুল, যেখানে তাঁর ব্যাটিং গড় ছিল প্রায় ৭০। তবে এবার তিনি মনোযোগ দিচ্ছেন কোচিংয়ে। বিপিএলের রংপুর রাইডার্স, প্রিমিয়ার লিগের শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব এবং জাতীয় লিগে বরিশালের কোচ হিসেবে কাজ করার অভিজ্ঞতা তাঁকে জাতীয় পর্যায়ে নিয়ে এসেছে।

আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে দুই টেস্ট ও তিন টি–টোয়েন্টির সিরিজকে সামনে রেখে আশরাফুল ইতোমধ্যে একটি কার্যপ্রণালী ঠিক করে ফেলেছেন। ৭ নভেম্বর সিলেটে দলের সঙ্গে যোগ দিয়ে প্রধান কোচ ফিল সিমন্সের সঙ্গে পরিকল্পনা ভাগাভাগি করবেন তিনি। ১১ নভেম্বর শুরু হবে সিরিজের প্রথম টেস্ট।

আশরাফুল মনে করেন, জাতীয় দলের ব্যাটসম্যানদের টেকনিকের চেয়ে বেশি প্রয়োজন পরিস্থিতি অনুযায়ী খেলার মানসিক প্রস্তুতি। তাঁর ভাষায়, “আমাদের ব্যাটসম্যানরা অনেক সময় বুঝতে পারে না কোন উইকেটে কত রান করলে ম্যাচ জেতা যাবে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে এই অঙ্কটা তারা করতে পারে না বলেই ভুলভাবে খেলে। আমি চেষ্টা করব ওই জায়গাটা নিয়ে কাজ করতে।”

তিনি উদাহরণ হিসেবে টেনেছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে সৌম্য সরকারের ইনিংসকে। ৩১ ওভার উইকেটে থেকে মাত্র ৪৫ রান করে আউট হওয়া সৌম্য পরে আফসোস করেছেন, সুযোগটা কাজে লাগাতে পারেননি। আশরাফুল মনে করেন, ব্যাটসম্যানদের সামনে পরিস্থিতির স্পষ্ট ছবি তুলে ধরতে পারলে তারা আরও ভালো সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন।

আশরাফুলের মতে, আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ভালো ব্যাটিংয়ের জন্য মানসিক শক্তি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। “একজন ব্যাটসম্যান প্রতিটি বলই কিছু না কিছু ভেবে খেলে। যে বলে আউট হয়, সেই বলেও তার একটা ভাবনা থাকে। আমি মনে করি টেকনিক্যাল ভুলের চেয়ে ওই বলটা নিয়ে ভাবনার ভুলের কারণেই সে বেশির ভাগ সময় আউট হয়।”

জাতীয় দলের অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যানদের কাছেও তাঁর প্রত্যাশা স্পষ্ট। তিনি বলেন, “লিটন, শান্ত, সৌম্যরা ক্যারিয়ারের যে জায়গায় আছে, প্রতি এক ম্যাচ পরপরই তাদের বড় ইনিংস খেলা উচিত। তাদের সে সামর্থ্য আছেও।” পারফরম্যান্সে রূপান্তরের জন্য ব্যাটসম্যানদের নিজের লক্ষ্য ও পদ্ধতি সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা থাকা জরুরি বলেও মনে করেন তিনি।

আশরাফুলের অভিজ্ঞতা, বিশ্লেষণ এবং মানসিক প্রস্তুতির ওপর জোর দেওয়ার কৌশল জাতীয় দলের ব্যাটিং বিভাগে নতুন মাত্রা যোগ করতে পারে। তাঁর বিশ্বাস, সঠিক দিকনির্দেশনা পেলে ব্যাটসম্যানরা নিজেরাই বাকিটা সামলে নিতে পারবেন।