
অনলাইন ডেস্ক:
কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষিত আওয়ামী লীগ ও এর ভ্রাতৃপ্রতীম সংগঠন ছাত্রলীগসহ অঙ্গ-সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীদের ঝটিকা মিছিলের পুনরুত্থান ঠেকাতে কঠোর অবস্থান নিয়েছে সরকার। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে দায়ের করা মামলাগুলোর দ্রুত চার্জশিট প্রদান এবং বিচারকাজ ত্বরান্বিত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি জুলাই অভ্যুত্থানের পক্ষের রাজনৈতিক শক্তিগুলোর মধ্যে সমন্বয় গড়ে তোলার পরামর্শও এসেছে উচ্চপর্যায়ের নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর পক্ষ থেকে।
সাম্প্রতিক সময়ে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা নিয়মিতভাবে ঝটিকা মিছিল করছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তথ্য অনুযায়ী, এসব মিছিল সাধারণত ৪-৫ মিনিট স্থায়ী হয় এবং অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা ১৫ থেকে ৬০ জনের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে। কুমিল্লার চান্দিনা মহাসড়ক, কেরানীগঞ্জের চুনকুটিয়া, বাংলামোটর, গুলশান, ধানমন্ডি, বিজয় সরণি ও তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলসহ একাধিক এলাকায় এ ধরনের মিছিলের ঘটনা ঘটেছে।
৫ সেপ্টেম্বর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলে কয়েকশ নেতাকর্মী নিয়ে একটি বড় মিছিল অনুষ্ঠিত হয়, যা গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা ও সংসদ সদস্যদের দেশত্যাগের পর প্রথম উল্লেখযোগ্য উপস্থিতি বলে মনে করা হচ্ছে। নিরাপত্তা সূত্রে জানা গেছে, জুলাই অভ্যুত্থনের পক্ষের একটি দলের স্থানীয় এক প্রভাবশালী নেতার ইন্ধনে এই মিছিল সংগঠিত হয়। পরবর্তীতে ওই নেতাকে দলীয় পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার শেখ সাজ্জাত আলী জানিয়েছেন, ঝটিকা মিছিলের বিষয়ে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। প্রতিদিনই অভিযান চালিয়ে মিছিলকারীদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে এবং সন্ত্রাসবিরোধী আইনে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। চট্টগ্রাম জেলার পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলাম শানতু বলেন, জনশৃঙ্খলা রক্ষায় কোনো ধরনের ছাড় দেওয়া হবে না।
মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিমিনোলজি অ্যান্ড পুলিশ সায়েন্স বিভাগের চেয়ারম্যান ড. ওমর ফারুক মনে করেন, জুলাই অভ্যুত্থনের পক্ষের রাজনৈতিক দলগুলোর অনৈক্যই নিষিদ্ধ সংগঠনের পুনরুত্থানে সহায়ক হয়েছে। তিনি দলগুলোকে ফ্যাসিবাদী শক্তির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ অবস্থান নেওয়ার আহ্বান জানান।
পুলিশ সদর দপ্তরের সহকারী মহাপরিদর্শক (মিডিয়া) এএইচএম শাহাদাত হোসেন জানিয়েছেন, আইনের যথাযথ প্রয়োগে সর্বোচ্চ আন্তরিকতা দেখানো হচ্ছে। পাশাপাশি রাজধানীর বাইরের এলাকাগুলোতেও একই ধরনের তৎপরতা চালানোর জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
সরকারের এই কঠোর অবস্থান কার্যক্রম নিষিদ্ধ সংগঠনগুলোর পুনরায় সংগঠিত হওয়ার প্রচেষ্টাকে রুখে দিতে কতটা কার্যকর হয়, তা সময়ই বলে দেবে। তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সক্রিয়তা এবং রাজনৈতিক সমন্বয়ই হতে পারে স্থায়ী সমাধানের পথ।
Reporter Name 













