
অনলাইন ডেস্ক:
উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের নামে চান্দিনা উপজেলায় সরকারি অর্থে চলছে সীমাহীন দুর্নীতি ও লুটপাট। প্রকল্প বাস্তবায়নের নামে নামমাত্র কাজ করে লোপাট করা হচ্ছে কোটি কোটি টাকার সরকারি বরাদ্দ। আজ ১৩ই সেপ্টেম্বর দৈনিক যুগান্তরের অনলাইন নিউজ পোর্টালে উঠে এসেছে একাধিক প্রকল্পে অর্থ আত্মসাতের চাঞ্চল্যকর তথ্য। প্রতিবেদনে বলা হয়—
২০২৩-২৪ অর্থবছরে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর চান্দিনা উপজেলার চেংগাছিয়া থেকে ঘাটিগড়া হয়ে হরিণা পর্যন্ত ৩ কিলোমিটার খাল পুনঃখননের জন্য বরাদ্দ দেয় ২৬ লাখ ৮০ হাজার টাকা। প্রকল্পটি তিন ভাগে ভাগ করে বাস্তবায়নের দায়িত্ব দেওয়া হয় চিংগাছিয়া সমবায় সমিতিকে।
তিনটি ভাগে খরচের হিসাব ছিল যথাক্রমে:
- প্রথম ভাগ: ১৪০০ মিটার, ব্যয় ৯,০৮,৫১৬ টাকা (সভাপতি: মোঃ জাকির হোসেন)
- দ্বিতীয় ভাগ: ৮০০ মিটার, ব্যয় ৮,৭২,৩১৬ টাকা (সভাপতি: মোঃ আনিছুর রহমান)
- তৃতীয় ভাগ: ৮০০ মিটার, ব্যয় ৮,৯৯,৮৯৫ টাকা (সভাপতি: শারমিন আক্তার)
তবে প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যবহার করা হয় মাত্র ৭ লাখ টাকা। এক্সকাভেটর মালিক জসিম উদ্দিন জানান, “খালে বাঁধ দিয়ে পানি সেচ এবং ভেকু দিয়ে মাটি কাটার কাজের জন্য আমার বিল হয়েছে ৭ লাখ টাকা।”
স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করেন, খাল পুনঃখননের কাজ পানির মধ্যেই করা হয়েছে, ফলে প্রকৃত খননের পরিমাণ নির্ধারণ করা সম্ভব নয়। কাদামাটি খালের পাড়ে ফেলে আবার তা খালে ফিরে গেছে। অনেক স্থানে খননের কোনো চিহ্নই নেই।
জেলা পরিষদের ১৩ লাখ টাকার বরাদ্দে উপজেলা পরিষদের অভ্যন্তরে একটি সরকারি পুকুরের পাড়ে ৩৫ মিটার দৈর্ঘ্য ও ২.১ মিটার উচ্চতার একটি রিটার্নিং ওয়াল নির্মাণের দায়িত্ব পায় মেসার্স দীপ্ত এন্টারপ্রাইজ। প্রকৃত নির্মাণ ব্যয় ছিল মাত্র পৌনে ৬ লাখ টাকা। অথচ পুরো বরাদ্দের টাকা তুলে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে। নির্মাণে ব্যবহৃত হয়েছে: ১২ হাজার ইট, ২০০ ব্যাগ সিমেন্ট, ২ টন রড
চান্দিনা উপজেলা প্রকৌশলী মুহাম্মদ রাকিবুল ইসলাম বলেন, “আমরা লেন্থ ধরে তিন ভাগে ভাগ করেছি। এক্সকাভেটরওলার সাথে আমাদের কোনো চুক্তি নেই। সরকারি রেট অনুযায়ী বিল করতে হয়।”
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ আশরাফুল হক জানান, “রিটার্নিং ওয়ালের দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ সিডিউলের সঙ্গে মিলেছে। তবে প্রকৃত খরচ বা মালামালের পরিমাণ সম্পর্কে আমার কাছে কোনো তথ্য নেই।”
স্থানীয়দের অভিযোগ, এসব দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত রয়েছেন প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি, ঠিকাদার এবং প্রভাবশালী মহল। প্রশাসনের নীরবতা ও পর্যাপ্ত নজরদারির অভাবে অনিয়ম দিন দিন বেড়েই চলেছে। সচেতন মহল মনে করছেন, এসব দুর্নীতির বিরুদ্ধে দ্রুত তদন্ত ও কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ জরুরি।
Reporter Name 











