সোমবার, ০১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনামঃ
চান্দিনায় চুরির জেরে রাজনৈতিক দুই দলের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষে রণক্ষেত্র চিলোড়া বাজার ঢাকাস্থ চান্দিনা ছাত্র কল্যাণ সমিতির ২০২৫–২৬ অর্থবছরের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা উইন্ডোজের বিকল্প অপারেটিং সিস্টেম আনছে গুগল, পিসিতেই মিলবে অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ দক্ষিণ এশিয়ায় ভয়াবহ বন্যা ও ভূমিধস: নিহত প্রায় ৬০০, নিখোঁজ শতাধিক দেবিদ্বারে গাঁজাসহ স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা আটক কুমিল্লা ফুডপান্ডায় নিয়োগ, অভিজ্ঞতা ছাড়াও আবেদনের সুযোগ বুড়িচংয়ে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে বসতঘরসহ দুটি ঘর পুড়ে ছাই শ্রীলঙ্কায় জরুরি অবস্থা ঘোষণা অবস্থা ‘অপরিবর্তিত’ এখনও ‘শঙ্কামুক্ত নন’ বেগম খালেদা জিয়া মঞ্চে লাল গালিচার ব্যবহার কীভাবে এলো? জানুন এর ইতিহাস

ভোটের তারিখ জানা যাবে কবে?

চান্দিনা মেইল অনলাইনঃ

বিবিসি বাংলার প্রথম পাতার খবর, ভোটের তারিখ জানা যাবে কবে?

প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, আগামী বছর ফেব্রুয়ারিতে রমজান মাস শুরুর আগেই ভোট হবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা

বাংলাদেশে আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস যে ঘোষণা দিয়েছেন, সেটি ঘিরে দেশটির রাজনৈতিক অঙ্গন আবারও চাঙা হয়ে উঠতে শুরু করেছে।

বিএনপি, জামায়াতসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ইতোমধ্যেই সরকারের এমন সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে তাদের প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করেছে। ঘোষণাটিকে ‘ঐতিহাসিক’ বলে বর্ণনা করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

“এই ঐতিহাসিক ঘোষণা বাংলাদেশে রাজনৈতিক অচলাবস্থা কাটিয়ে উঠবে এবং গণতন্ত্র উত্তরণের পথকে সুগম করবে,” বুধবার ঢাকার গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বলেন মি. আলমগীর। ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে রোজা শুরুর আগে আয়োজনের জন্য সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করতে বুধবার নির্বাচন কমিশনকে চিঠি দিয়েছে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং এ তথ্য জানিয়ে বলেছে, এই পত্রের মাধ্যমে নির্বাচন আয়োজনের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে নির্বাচন কমিশনকে অনুরোধের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হলো। তবে বুধবার চিঠি পাওয়ার আগেই প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিন জানিয়েছিলেন, নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য প্রয়োজনীয় সব প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।

”আমরা আগে থেকে প্রস্তুতি নিচ্ছি। ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের নানা ধরনের চ্যালেঞ্জ থাকলেও আমাদের প্রস্তুতি এগিয়ে যাচ্ছে,” বুধবার নির্বাচন ভবনে এক ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের বলেন মি. উদ্দিন। গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে অধ্যাপক ইউনূস উল্লেখ করেছেন যে, ২০২৬ সালে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে রমজান মাস শুরুর আগে।

চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী বছরের ১৮ই ফেব্রুয়ারি রোজা শুরু হতে পারে বলে জানা যাচ্ছে। এক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধের মধ্যেই ভোট সম্পন্ন করতে হবে। কিন্তু ঠিক কত তারিখে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে, সেটি জানা যাবে কবে? নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ভোটের আয়োজন সম্পন্ন করার জন্য আগামী ছয় মাসে কী কী কাজ সম্পন্ন করতে হবে নির্বাচন কমিশনকে?

নির্বাচনি রোডম্যাপ কবে?

বাংলাদেশে প্রতিবার জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে একটি রোডম্যাপ বা কর্মপরিকল্পনা প্রকাশ করতে দেখা যায় নির্বাচন কমিশনকে। সাধারণত ভোট অনুষ্ঠিত হওয়ার অন্তত বছরখানেক আগে এই রোডম্যাপ ঘোষণা করা হয় বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।

কিন্তু গণ অভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশে এবার একটি বিশেষ পরিস্থিতিতে নির্বাচনের আয়োজন করতে হচ্ছে কমিশনকে। ফলে রোডম্যাপ ঘোষণার জন্য খুব বেশি সময় তাদের হাতে নেই। নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা এতদিন বলে আসছিল যে, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সরকার ভোটের ব্যাপারে চূড়ান্ত সময়সীমা নির্ধারণ করতে না পারায় তারা রোডম্যাপ ঘোষণা করতে পারছেন না। কিন্তু প্রধান উপদেষ্টার ভাষণের মধ্য দিয়ে মঙ্গলবার সেই সংকট কেটে গেছে। তাহলে কবে ঘোষণা করা হবে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রোডম্যাপ?

See also  অবস্থা 'অপরিবর্তিত' এখনও 'শঙ্কামুক্ত নন’ বেগম খালেদা জিয়া

“নির্বাচনে অনুষ্ঠানের জন্য যেহেতু একটা সময়সীমা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, সেহেতু এবার আমরা আমাদের অ্যাকশনপ্ল্যান ঘোষণা করতে পারবো। খুব শিগরিরই সেটি ঘোষণা করা হবে,” বিবিসি বাংলাকে বলেন নির্বাচন কমিশনার মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার। ওই কর্মপরিকল্পনাতে কবে নাগাদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হবে এবং তফসিলের আগে-পরে কী কী কাজ সম্পন্ন করা হবে, সেটি উল্লেখ করা হবে। এক্ষেত্রে তফসিল ঘোষণার পূর্বে ভোটার তালিকা প্রস্তুত, সংসদীয় আসন পুনর্বিন্যাস, নতুন দল নিবন্ধন, নির্বাচনে অংশ নিতে যাওয়া দলের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ, ভোটকেন্দ্র নির্ধারণ, নির্বাচনি কর্মকর্তাদের নিয়োগ ও প্রশিক্ষণ, পর্যবেক্ষক সংস্থার নিবন্ধন, নির্বাচনি সরঞ্জাম কেনাকাটা, ব্যালট পেপার প্রস্তুত সহ আরও কিছু বিষয় যুক্ত থাকবে বলে জানান কর্মকর্তারা। এসব বিষয়ে প্রস্তুতি গ্রহণের পর ঘোষণা করা হবে নির্বাচনের তফসিল।

কবে তফসিল ঘোষণা?

যেকোনো নির্বাচনের আগে সেটির একটি তফসিল ঘোষণা করে থাকে নির্বাচন কমিশন। “সেখানেই ভোটের জন্য নির্ধারিত দিন-ক্ষণ আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয়,” বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন নির্বাচন বিশেষজ্ঞ আব্দুল আলীম।

তবে দিন-তারিখ ছাড়াও প্রার্থীরা কবে থেকে মনোনয়ন সংগ্রহ ও জমা দিতে পারবেন, মনোনয়নের কাগজপত্র কতদিনের মধ্যে বাছাই করা হবে, কাগজ বাতিল হলে প্রার্থিতা প্রত্যাশী ব্যক্তিরা কতদিন পর্যন্ত নির্বাচন কমিশনে আপিল করতে পারবে- এরকম খুঁটিনাটি আরও অনেক বিষয়ে তথ্য দেওয়া থাকে তফসিলে। এছাড়া যারা প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পাবেন, তাদের তালিকা কবে নাগাদ ছাপানো হবে, নির্বাচনি প্রচারণা কবে থেকে শুরু করা যাবে আর কতদিন পর্যন্ত তা চালানো যাবে, নির্বাচনের দিন ক’টার সময় ভোট শুরু হয়ে কতক্ষণ চলবে, ভোট শেষে কোথায়-কীভাবে ভোট গণনা করা হবে, তফসিলে সেটিরও উল্লেখ থাকে।

নির্বাচন কর্মকর্তারা বলছেন, সাধারণত নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার দেড় থেকে দুই মাস আগে সেটার তফসিল ঘোষণা করা হয়ে থাকে। “এবারও সেটার খুব একটা ব্যতিক্রম হবে না,” বিবিসি বাংলাকে বলেন নির্বাচন কমিশনার মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার। বুধবার নিজ কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনেও একই কথা জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিন। “ভোটের যে তারিখ ঠিক হবে, তার দু’মাস আগে তফসিল ঘোষণা করা হবে,” বলেন মি. উদ্দিন।

See also  দেবিদ্বারে গাঁজাসহ স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা আটক

২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে রোজা শুরু হওয়ার আগেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন অধ্যাপক ইউনূস। সেই হিসেবে আগামী ডিসেম্বর মাসে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হতে পারে বলে বিবিসি বাংলাকে ইঙ্গিত দিয়েছেন নির্বাচন কর্মকর্তারা। “বলা হয়েছে, ফেব্রুয়ারিতে রমজানের আগে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সেক্ষেত্রে ওই সময়ে (ডিসেম্বরে) ঘোষণা হতে পারে,” বিবিসি বাংলাকে বলেন নির্বাচন কমিশনার মি. সরকার।

অন্যান্য প্রস্তুতি কতদূর?

আসন্ন সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ভোটার তালিকা প্রস্তুত, সংসদীয় আসন পুনর্বিন্যাস, নতুন দল নিবন্ধন, নির্বাচনে অংশ নিতে যাওয়া দলের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ, ভোটকেন্দ্র নির্ধারণ, নির্বাচনি কর্মকর্তাদের নিয়োগ ও প্রশিক্ষণ, পর্যবেক্ষক সংস্থার নিবন্ধন, নির্বাচনি সরঞ্জাম কেনাকাটা, ব্যালট পেপার প্রস্তুত করাসহ যাবতীয় প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে নির্বাচন কমিশন।

“এক্ষেত্রে ভোটার তালিকা হালনাগাদের কাজ প্রায় শেষ হয়ে এসেছে,” বিবিসি বাংলাকে বলেন নির্বাচন কমিশনার মি. সরকার।

এর আগে, চলতি বছরের শুরুতে দোসরা মার্চে ভোটারদের তালিকা প্রকাশ করেছিল নির্বাচন কমিশন। সেখানে ১২ কোটি ৩৭ লাখেরও বেশি ভোটার দেখা গেছে।

বাড়ি বাড়ি গিয়ে ওই তালিকাটি হালনাগাদ করা হয়েছে, যা প্রকাশ করা হবে আগামী ১০ই অগাস্ট। সেখানে কেউ কোনো অভিযান তুললে সেটি নিষ্পত্তি শেষে ৩১শে অগাস্টের মধ্যে তালিকা চূড়ান্ত করা হবে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশন সচিব আখতার আহমেদ।

ভোটের আগে নির্বাচনি এলাকার সীমানা নির্ধারণ করতে হবে নির্বাচন কমিশনকে। ইতোমধ্যেই তারা ৩০০ সংসদীয় আসনের সীমানার খসড়া প্রকাশ করা হয়েছে, যেখানে বাগেরহাট ও গাজীপুরসহ তিন ডজনেরও বেশি এলাকায় পরিবর্তনের প্রস্তাব করা হয়েছে।

সীমানা নিয়ে আপত্তি থাকলে আগামী ১০ই অগাস্টের মধ্যে জানাতে বলা হয়েছে। এরপর শুনানি শেষে অগাস্টের মধ্যেই সীমানা চূড়ান্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন মি. আহমেদ।

এছাড়া ইতোমধ্যে সীমানা আইন সংশোধন অধ্যাদেশ, ভোটার তালিকা সংশোধন অধ্যাদেশ, ভোটকেন্দ্র স্থাপন নীতিমালা, স্থানীয় পর্যবেক্ষক নীতিমালা, বিদেশি পর্যবেক্ষক ও গণমাধ্যম নীতিমালা, পর্যবেক্ষক সংস্থা নীতিমালা জারি ও আবেদন আহ্বান করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।

সাতই অগাস্ট এগুলো নিয়ে নির্বাচন কমিশনের সভা হওয়ার কথা রয়েছে। সেখানে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধনের প্রস্তাব এবং রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালা চূড়ান্ত হতে পারে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।

নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক দলগুলোর নিবন্ধন আবেদন যাচাই-বাছাই করে সেগুলোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত দিতে হবে কমিশনকে। কর্মকর্তাদের দেওয়া তথ্যমতে, বর্তমানে প্রায় ১৪৫টি দলের নিবন্ধন আবেদন তাদের কাছে জমা পড়েছে।

এর মধ্যে তথ্য ঘাটতি চেয়ে চিঠি দেওয়ার পর ৮০টির মতো দল প্রয়োজনীয় নথি দিয়েছে। এছাড়া সময় বাড়াতে আবেদন করেছে ছয়টি দল। তফসিল ঘোষণার আগেই নতুন আবেদনগুলো নিষ্পত্তি করে ভোটে অংশ নেওয়া দলের তালিকা প্রকাশ করতে হবে নির্বাচন কমিশনকে।

See also  আবারো ভূমিকম্পে কাঁপলো দেশ

এর বাইরে, ভোটকেন্দ্র নির্ধারণ ও প্রস্তুত করা, নির্বাচনি কর্মকর্তাদের নিয়োগ ও প্রশিক্ষণ, পর্যবেক্ষক সংস্থার নিবন্ধন, নির্বাচনি সরঞ্জাম কেনাকাটা, ব্যালট পেপার প্রস্তুতসহ অন্যান্য কাজও চলছে বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন।

“আগামী ৩০শে সেপ্টেম্বরের মধ্যে সব ধরনের নির্বাচনি সরঞ্জাম কেনাকাটা শেষ হবে। লোকাল পারচেজ প্রকিউরমেন্টে আটটি আইটেম ছিল। তার ভেতরে একটিতে পুনরায় দরপত্র দিতে হয়েছে। আমার বিশ্বাস, আমাদের যে সময়সীমা রয়েছে, তার মধ্যে পাওয়া যাবে,” সাংবাদিকদের বলেন নির্বাচন কমিশন সচিব আখতার আহমেদ।

এছাড়া এবার ভোটে অনিয়ম বন্ধে এবার নির্বাচনি কর্মকর্তা নিয়োগে নতুন কৌশল নিচ্ছে নির্বাচন কমিশন। এক্ষেত্রে বড় পরিবর্তন আনা হচ্ছে প্রিসাইডিং কর্মকর্তা নিয়োগে।

কোথাও কোথাও জেলা প্রশাসকদের পরিবর্তে ইসির নিজস্ব কর্মকর্তাদের রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবেও নিয়োগ দেওয়া হবে বলে সম্প্রতি বিবিসি বাংলাকে জানান প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিন।

কমিশনের সামনে যত চ্যালেঞ্জ

আওয়ামী লীগের শাসনামলের গত দেড় দশকে বাংলাদেশে যে তিনটি জাতীয় নির্বাচনের আয়োজন করা হয়, সেগুলোর সবগুলোই ছিল বিতর্কিত। ওই সময় ভোট দিতে না পারার অভিযোগ তোলেন অনেক ভোটার। এতে সাধারণ মানুষের মধ্যে নির্বাচন নিয়ে আস্থার সংকট তৈরি হয়েছে বলে মনে করছেন নির্বাচন বিশেষজ্ঞরা।

ফলে আগামী নির্বাচনে ভোটারদের আস্থা অর্জনকেই বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিন। “ভোটারদের কেন্দ্রে উপস্থিতি বাড়ানো বড় চ্যালেঞ্জ। আমরা নির্বিঘ্ন পরিবেশ নিশ্চিত করতে চাই। যেন উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট হয়,” বুধবার সাংবাদিকদের বলেন মি. উদ্দিন।

আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়েও অনেকের মধ্যে শঙ্কা রয়েছে। “তবে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে। আগামী কয়েক মাসে পরিস্থিতির আরো উন্নতি হবে। আমরা আয়নার মত স্বচ্ছ নির্বাচন উপহার দিতে চাই,” বলেন মি. উদ্দিন।

নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণার আগেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে ভুয়া ভিডিও বানিয়ে দলগুলোকে নানান ধরনের প্রচারণা চালাতে দেখা যাচ্ছে, যা নিয়ে অনেকের মধ্যে শঙ্কা দেখা যাচ্ছে। ভোটের আগে এ ধরনের প্রচারণা আরও বেড়ে যেতে পারে বলে ধারণা করছেন বিশেষজ্ঞরা। ফলে নির্বাচনি প্রচারণায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআইয়ের অপব্যবহার রোধ করার বিষয়টিও কমিশনের সামনে আরেকটি বড় চ্যালেঞ্জ হতে পারে বলে ধারণা করছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার।

চান্দিনায় চুরির জেরে রাজনৈতিক দুই দলের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষে রণক্ষেত্র চিলোড়া বাজার

ভোটের তারিখ জানা যাবে কবে?

৭ অগাস্ট ২০২৫, ২:৩৬

চান্দিনা মেইল অনলাইনঃ

বিবিসি বাংলার প্রথম পাতার খবর, ভোটের তারিখ জানা যাবে কবে?

প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, আগামী বছর ফেব্রুয়ারিতে রমজান মাস শুরুর আগেই ভোট হবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা

বাংলাদেশে আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস যে ঘোষণা দিয়েছেন, সেটি ঘিরে দেশটির রাজনৈতিক অঙ্গন আবারও চাঙা হয়ে উঠতে শুরু করেছে।

বিএনপি, জামায়াতসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ইতোমধ্যেই সরকারের এমন সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে তাদের প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করেছে। ঘোষণাটিকে ‘ঐতিহাসিক’ বলে বর্ণনা করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

“এই ঐতিহাসিক ঘোষণা বাংলাদেশে রাজনৈতিক অচলাবস্থা কাটিয়ে উঠবে এবং গণতন্ত্র উত্তরণের পথকে সুগম করবে,” বুধবার ঢাকার গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বলেন মি. আলমগীর। ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে রোজা শুরুর আগে আয়োজনের জন্য সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করতে বুধবার নির্বাচন কমিশনকে চিঠি দিয়েছে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং এ তথ্য জানিয়ে বলেছে, এই পত্রের মাধ্যমে নির্বাচন আয়োজনের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে নির্বাচন কমিশনকে অনুরোধের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হলো। তবে বুধবার চিঠি পাওয়ার আগেই প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিন জানিয়েছিলেন, নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য প্রয়োজনীয় সব প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।

”আমরা আগে থেকে প্রস্তুতি নিচ্ছি। ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের নানা ধরনের চ্যালেঞ্জ থাকলেও আমাদের প্রস্তুতি এগিয়ে যাচ্ছে,” বুধবার নির্বাচন ভবনে এক ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের বলেন মি. উদ্দিন। গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে অধ্যাপক ইউনূস উল্লেখ করেছেন যে, ২০২৬ সালে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে রমজান মাস শুরুর আগে।

চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী বছরের ১৮ই ফেব্রুয়ারি রোজা শুরু হতে পারে বলে জানা যাচ্ছে। এক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধের মধ্যেই ভোট সম্পন্ন করতে হবে। কিন্তু ঠিক কত তারিখে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে, সেটি জানা যাবে কবে? নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ভোটের আয়োজন সম্পন্ন করার জন্য আগামী ছয় মাসে কী কী কাজ সম্পন্ন করতে হবে নির্বাচন কমিশনকে?

নির্বাচনি রোডম্যাপ কবে?

বাংলাদেশে প্রতিবার জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে একটি রোডম্যাপ বা কর্মপরিকল্পনা প্রকাশ করতে দেখা যায় নির্বাচন কমিশনকে। সাধারণত ভোট অনুষ্ঠিত হওয়ার অন্তত বছরখানেক আগে এই রোডম্যাপ ঘোষণা করা হয় বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।

কিন্তু গণ অভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশে এবার একটি বিশেষ পরিস্থিতিতে নির্বাচনের আয়োজন করতে হচ্ছে কমিশনকে। ফলে রোডম্যাপ ঘোষণার জন্য খুব বেশি সময় তাদের হাতে নেই। নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা এতদিন বলে আসছিল যে, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সরকার ভোটের ব্যাপারে চূড়ান্ত সময়সীমা নির্ধারণ করতে না পারায় তারা রোডম্যাপ ঘোষণা করতে পারছেন না। কিন্তু প্রধান উপদেষ্টার ভাষণের মধ্য দিয়ে মঙ্গলবার সেই সংকট কেটে গেছে। তাহলে কবে ঘোষণা করা হবে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রোডম্যাপ?

See also  কুমিল্লার নতুন এসপি আনিসুজ্জামান

“নির্বাচনে অনুষ্ঠানের জন্য যেহেতু একটা সময়সীমা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, সেহেতু এবার আমরা আমাদের অ্যাকশনপ্ল্যান ঘোষণা করতে পারবো। খুব শিগরিরই সেটি ঘোষণা করা হবে,” বিবিসি বাংলাকে বলেন নির্বাচন কমিশনার মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার। ওই কর্মপরিকল্পনাতে কবে নাগাদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হবে এবং তফসিলের আগে-পরে কী কী কাজ সম্পন্ন করা হবে, সেটি উল্লেখ করা হবে। এক্ষেত্রে তফসিল ঘোষণার পূর্বে ভোটার তালিকা প্রস্তুত, সংসদীয় আসন পুনর্বিন্যাস, নতুন দল নিবন্ধন, নির্বাচনে অংশ নিতে যাওয়া দলের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ, ভোটকেন্দ্র নির্ধারণ, নির্বাচনি কর্মকর্তাদের নিয়োগ ও প্রশিক্ষণ, পর্যবেক্ষক সংস্থার নিবন্ধন, নির্বাচনি সরঞ্জাম কেনাকাটা, ব্যালট পেপার প্রস্তুত সহ আরও কিছু বিষয় যুক্ত থাকবে বলে জানান কর্মকর্তারা। এসব বিষয়ে প্রস্তুতি গ্রহণের পর ঘোষণা করা হবে নির্বাচনের তফসিল।

কবে তফসিল ঘোষণা?

যেকোনো নির্বাচনের আগে সেটির একটি তফসিল ঘোষণা করে থাকে নির্বাচন কমিশন। “সেখানেই ভোটের জন্য নির্ধারিত দিন-ক্ষণ আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয়,” বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন নির্বাচন বিশেষজ্ঞ আব্দুল আলীম।

তবে দিন-তারিখ ছাড়াও প্রার্থীরা কবে থেকে মনোনয়ন সংগ্রহ ও জমা দিতে পারবেন, মনোনয়নের কাগজপত্র কতদিনের মধ্যে বাছাই করা হবে, কাগজ বাতিল হলে প্রার্থিতা প্রত্যাশী ব্যক্তিরা কতদিন পর্যন্ত নির্বাচন কমিশনে আপিল করতে পারবে- এরকম খুঁটিনাটি আরও অনেক বিষয়ে তথ্য দেওয়া থাকে তফসিলে। এছাড়া যারা প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পাবেন, তাদের তালিকা কবে নাগাদ ছাপানো হবে, নির্বাচনি প্রচারণা কবে থেকে শুরু করা যাবে আর কতদিন পর্যন্ত তা চালানো যাবে, নির্বাচনের দিন ক’টার সময় ভোট শুরু হয়ে কতক্ষণ চলবে, ভোট শেষে কোথায়-কীভাবে ভোট গণনা করা হবে, তফসিলে সেটিরও উল্লেখ থাকে।

নির্বাচন কর্মকর্তারা বলছেন, সাধারণত নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার দেড় থেকে দুই মাস আগে সেটার তফসিল ঘোষণা করা হয়ে থাকে। “এবারও সেটার খুব একটা ব্যতিক্রম হবে না,” বিবিসি বাংলাকে বলেন নির্বাচন কমিশনার মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার। বুধবার নিজ কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনেও একই কথা জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিন। “ভোটের যে তারিখ ঠিক হবে, তার দু’মাস আগে তফসিল ঘোষণা করা হবে,” বলেন মি. উদ্দিন।

See also  দেবিদ্বারে বিএনপির ২০০ নেতাকর্মীর জামায়াতে যোগদান

২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে রোজা শুরু হওয়ার আগেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন অধ্যাপক ইউনূস। সেই হিসেবে আগামী ডিসেম্বর মাসে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হতে পারে বলে বিবিসি বাংলাকে ইঙ্গিত দিয়েছেন নির্বাচন কর্মকর্তারা। “বলা হয়েছে, ফেব্রুয়ারিতে রমজানের আগে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সেক্ষেত্রে ওই সময়ে (ডিসেম্বরে) ঘোষণা হতে পারে,” বিবিসি বাংলাকে বলেন নির্বাচন কমিশনার মি. সরকার।

অন্যান্য প্রস্তুতি কতদূর?

আসন্ন সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ভোটার তালিকা প্রস্তুত, সংসদীয় আসন পুনর্বিন্যাস, নতুন দল নিবন্ধন, নির্বাচনে অংশ নিতে যাওয়া দলের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ, ভোটকেন্দ্র নির্ধারণ, নির্বাচনি কর্মকর্তাদের নিয়োগ ও প্রশিক্ষণ, পর্যবেক্ষক সংস্থার নিবন্ধন, নির্বাচনি সরঞ্জাম কেনাকাটা, ব্যালট পেপার প্রস্তুত করাসহ যাবতীয় প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে নির্বাচন কমিশন।

“এক্ষেত্রে ভোটার তালিকা হালনাগাদের কাজ প্রায় শেষ হয়ে এসেছে,” বিবিসি বাংলাকে বলেন নির্বাচন কমিশনার মি. সরকার।

এর আগে, চলতি বছরের শুরুতে দোসরা মার্চে ভোটারদের তালিকা প্রকাশ করেছিল নির্বাচন কমিশন। সেখানে ১২ কোটি ৩৭ লাখেরও বেশি ভোটার দেখা গেছে।

বাড়ি বাড়ি গিয়ে ওই তালিকাটি হালনাগাদ করা হয়েছে, যা প্রকাশ করা হবে আগামী ১০ই অগাস্ট। সেখানে কেউ কোনো অভিযান তুললে সেটি নিষ্পত্তি শেষে ৩১শে অগাস্টের মধ্যে তালিকা চূড়ান্ত করা হবে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশন সচিব আখতার আহমেদ।

ভোটের আগে নির্বাচনি এলাকার সীমানা নির্ধারণ করতে হবে নির্বাচন কমিশনকে। ইতোমধ্যেই তারা ৩০০ সংসদীয় আসনের সীমানার খসড়া প্রকাশ করা হয়েছে, যেখানে বাগেরহাট ও গাজীপুরসহ তিন ডজনেরও বেশি এলাকায় পরিবর্তনের প্রস্তাব করা হয়েছে।

সীমানা নিয়ে আপত্তি থাকলে আগামী ১০ই অগাস্টের মধ্যে জানাতে বলা হয়েছে। এরপর শুনানি শেষে অগাস্টের মধ্যেই সীমানা চূড়ান্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন মি. আহমেদ।

এছাড়া ইতোমধ্যে সীমানা আইন সংশোধন অধ্যাদেশ, ভোটার তালিকা সংশোধন অধ্যাদেশ, ভোটকেন্দ্র স্থাপন নীতিমালা, স্থানীয় পর্যবেক্ষক নীতিমালা, বিদেশি পর্যবেক্ষক ও গণমাধ্যম নীতিমালা, পর্যবেক্ষক সংস্থা নীতিমালা জারি ও আবেদন আহ্বান করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।

সাতই অগাস্ট এগুলো নিয়ে নির্বাচন কমিশনের সভা হওয়ার কথা রয়েছে। সেখানে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধনের প্রস্তাব এবং রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালা চূড়ান্ত হতে পারে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।

নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক দলগুলোর নিবন্ধন আবেদন যাচাই-বাছাই করে সেগুলোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত দিতে হবে কমিশনকে। কর্মকর্তাদের দেওয়া তথ্যমতে, বর্তমানে প্রায় ১৪৫টি দলের নিবন্ধন আবেদন তাদের কাছে জমা পড়েছে।

এর মধ্যে তথ্য ঘাটতি চেয়ে চিঠি দেওয়ার পর ৮০টির মতো দল প্রয়োজনীয় নথি দিয়েছে। এছাড়া সময় বাড়াতে আবেদন করেছে ছয়টি দল। তফসিল ঘোষণার আগেই নতুন আবেদনগুলো নিষ্পত্তি করে ভোটে অংশ নেওয়া দলের তালিকা প্রকাশ করতে হবে নির্বাচন কমিশনকে।

See also  অবস্থা 'অপরিবর্তিত' এখনও 'শঙ্কামুক্ত নন’ বেগম খালেদা জিয়া

এর বাইরে, ভোটকেন্দ্র নির্ধারণ ও প্রস্তুত করা, নির্বাচনি কর্মকর্তাদের নিয়োগ ও প্রশিক্ষণ, পর্যবেক্ষক সংস্থার নিবন্ধন, নির্বাচনি সরঞ্জাম কেনাকাটা, ব্যালট পেপার প্রস্তুতসহ অন্যান্য কাজও চলছে বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন।

“আগামী ৩০শে সেপ্টেম্বরের মধ্যে সব ধরনের নির্বাচনি সরঞ্জাম কেনাকাটা শেষ হবে। লোকাল পারচেজ প্রকিউরমেন্টে আটটি আইটেম ছিল। তার ভেতরে একটিতে পুনরায় দরপত্র দিতে হয়েছে। আমার বিশ্বাস, আমাদের যে সময়সীমা রয়েছে, তার মধ্যে পাওয়া যাবে,” সাংবাদিকদের বলেন নির্বাচন কমিশন সচিব আখতার আহমেদ।

এছাড়া এবার ভোটে অনিয়ম বন্ধে এবার নির্বাচনি কর্মকর্তা নিয়োগে নতুন কৌশল নিচ্ছে নির্বাচন কমিশন। এক্ষেত্রে বড় পরিবর্তন আনা হচ্ছে প্রিসাইডিং কর্মকর্তা নিয়োগে।

কোথাও কোথাও জেলা প্রশাসকদের পরিবর্তে ইসির নিজস্ব কর্মকর্তাদের রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবেও নিয়োগ দেওয়া হবে বলে সম্প্রতি বিবিসি বাংলাকে জানান প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিন।

কমিশনের সামনে যত চ্যালেঞ্জ

আওয়ামী লীগের শাসনামলের গত দেড় দশকে বাংলাদেশে যে তিনটি জাতীয় নির্বাচনের আয়োজন করা হয়, সেগুলোর সবগুলোই ছিল বিতর্কিত। ওই সময় ভোট দিতে না পারার অভিযোগ তোলেন অনেক ভোটার। এতে সাধারণ মানুষের মধ্যে নির্বাচন নিয়ে আস্থার সংকট তৈরি হয়েছে বলে মনে করছেন নির্বাচন বিশেষজ্ঞরা।

ফলে আগামী নির্বাচনে ভোটারদের আস্থা অর্জনকেই বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিন। “ভোটারদের কেন্দ্রে উপস্থিতি বাড়ানো বড় চ্যালেঞ্জ। আমরা নির্বিঘ্ন পরিবেশ নিশ্চিত করতে চাই। যেন উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট হয়,” বুধবার সাংবাদিকদের বলেন মি. উদ্দিন।

আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়েও অনেকের মধ্যে শঙ্কা রয়েছে। “তবে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে। আগামী কয়েক মাসে পরিস্থিতির আরো উন্নতি হবে। আমরা আয়নার মত স্বচ্ছ নির্বাচন উপহার দিতে চাই,” বলেন মি. উদ্দিন।

নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণার আগেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে ভুয়া ভিডিও বানিয়ে দলগুলোকে নানান ধরনের প্রচারণা চালাতে দেখা যাচ্ছে, যা নিয়ে অনেকের মধ্যে শঙ্কা দেখা যাচ্ছে। ভোটের আগে এ ধরনের প্রচারণা আরও বেড়ে যেতে পারে বলে ধারণা করছেন বিশেষজ্ঞরা। ফলে নির্বাচনি প্রচারণায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআইয়ের অপব্যবহার রোধ করার বিষয়টিও কমিশনের সামনে আরেকটি বড় চ্যালেঞ্জ হতে পারে বলে ধারণা করছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার।